অর্ণব দাস, বারাসত: তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের এক সদস্যের পরিবারের তিনজনের নামে এসেছে বাংলার বাড়ি প্রকল্পের প্রথম কিস্তির টাকা। সেই টাকায় তিনটি বাড়ি নয়, বরং তৈরি হচ্ছে একটি বাড়ি। দেগঙ্গা ব্লকের চাঁপাতলা পঞ্চায়েতের মামুরাবাদ গ্রামের চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা জানাজানি হতেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে গ্রামবাসীদের মধ্যে। ক্ষুব্ধদের প্রশ্ন, বাংলার বাড়ির টাকা দেওয়ার আগে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্ভে হয়েছিল। তারপরেও এই ঘটনা কীভাবে ঘটল?
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মামুরাবাদ গ্রামের অনেকেই ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু পেয়েছেন মাত্র ১০ জন উপভোক্তা। এর মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত তৃণমূল সদস্য লুৎফর রহমান মণ্ডল। প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা শুধু তিনি নয়, তাঁর স্ত্রী তাহমিনা বেগম ও ছেলে নাসির উদ্দিন মণ্ডলও পেয়েছেন। অভিযোগ, সেই টাকায় তিনটি বাড়ির বদলে তৈরি হচ্ছে একটি বাড়ি। বিষয়টি সামনে আসতেই পঞ্চায়েতের পাশাপাশি বিডিও, জেলাশাসককে এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরেও অভিযোগ জানানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা মুজিবর রহমান বলেছেন, “আমি ত্রিপলের ছাউনি দেওয়া বাড়িতে থাকি। একাধিকবার পঞ্চায়েত সদস্যকে বাংলার বাড়ির জন্য বলেছিলাম, কিন্তু পাইনি। উল্টে উনি তিনটি বাড়ি পেয়েছেন। আমরা বিডিও থেকে পঞ্চায়েত এবং নবান্নে অভিযোগ জানিয়েছি।”
অপর বাসিন্দা ইসমাইল মণ্ডল বলেন, “তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য নিজের প্রভাব খাটিয়ে তিনটি বাড়ির টাকা পেয়েছেন। কিন্তু বাড়ি তৈড়ি হচ্ছে একটি। কীভাবে এটা সম্ভব হচ্ছে আমাদের জানা নেই।” তবে, তিনটি বাড়ি না করে একটি বাড়ি তৈরি নিয়ে অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য লুৎফর রহমান মণ্ডল। তিনি বলেন, “এলাকায় কেউই ২০১৮ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী টাকা পাননি। ১০ জনের মতো যাঁরা টাকা পেয়েছেন, প্রত্যেকেই দিদিকে বলোতে ফোন করে পেয়েছেন। আমি, আমার স্ত্রী ও ছেলে একইভাবে ফোন করে বাংলার বাড়ির টাকা পেয়েছি।” এই প্রসঙ্গে দেগঙ্গার বিডিও ফাহিম আলম জানিয়েছেন, সমীক্ষা চলাকালীন কিছু ত্রুটির কারণে এমনটা হয়েছে। তবে, স্বামী স্ত্রীর মধ্যে একজনকে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আর যে দুটি বাড়ির টাকা পাবেন, সেটা আলাদা আলাদাভাবে তৈরি হচ্ছে দেখালে, তবেই মিলবে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.