রাজকুমার কর্মকার, আলিপুরদুয়ার: রুম্পি মাহাতো, সইজুল আলম বা অর্ক রায়। এদের সবার বয়স ১০-এর নিচে। নিয়মিত ওরা স্কুলে যায় না। বাইরের জগতের সঙ্গেও তেমন যোগাযোগ নেই। এরা আলিপুরদুয়ার শহরের যৌনকর্মীদের সন্তান। আর এদের নিয়েই বৈবাহিক জীবনের প্রথম বার্ষিকী উদযাপন করলেন শহরেরই বাসিন্দা রাতুল বিশ্বাস ও তাঁর স্ত্রী অন্বেষা বিশ্বাস।
[ট্রেনের প্যান্টোগ্রাফে আগুন, হাওড়া-বর্ধমান কর্ড শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত]
রবিবার নিজেদের প্রথম বিবাহবার্ষিকীতে আলিপুরদুয়ারের সমাজপাড়ায় যৌনপল্লিতে যৌনকর্মীদের সন্তানদের জন্য এলাহি আয়োজন করেছিলেন রাতুল ও অণ্বেষা। ছিল বল ছোড়া, মিউজিক্যাল চেয়ার-সহ নানা বিনোদনের হরেক বন্দোবস্ত। যৌনকর্মীদের সন্তানদের হাতে কেক, বিস্কুট, খাতা, পেন ও পেন্সিলও বিতরণ করেন ওই দম্পতি। অভিনব এই বিবাহবার্ষিকী উদযাপনে শামিল হয়েছিলেন বহু মানুষ। আপ্লুত সকলেই।
[রাজস্থানের ঘটনা এখানে হলে বিজেপি নেতাকে পুড়িয়ে মারতাম: অনুব্রত]
কিন্তু, কেন এই অভিনব ভাবনা? অন্বেষা বিশ্বাস বলেন, “যৌনপল্লির ছেলেমেয়েরা কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারে না। শহুরে সভ্য সমাজ এদের মূল স্রোতে আসতে বাধা দেয়। এটা একটা সামাজিক ব্যাধির মতো। সেই অসুখের মূলে আঘাত করতে চেয়েছি আমরা। তাই দু’জনেই ঠিক করি, আমাদের প্রথম বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করব এদের অন্দরমহলে। ওদের সঙ্গে সময় কাটানো আমাদের জীবনের অমূল্য কিছু মুহূর্ত হয়ে থাকবে। প্রথম বিবাহবার্ষিকী এত সুন্দরভাবে কাটবে তা কোনওদিন কল্পনা করতে পারিনি।” দম্পতির এই উদ্যোগে শামিল হয় ফালাকাটা এলিক্সার এডুকেশনাল অ্যান্ড সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি নামে একটি সংগঠন। যৌনপল্লির কচিকাঁচাদের স্কুলব্যাগ বিতরণ করেন সংগঠনের সদস্যরা।
[বিচারকের দায়িত্বে ৩ রূপান্তরকামী, মালদহে নজির]
দাম্পত্যের বর্ষপূর্তির এই অভিনব উদযাপনে অভিভূত আলিপুরদুয়ার দুর্বার মহিলা সমিতির নেত্রী শিপ্রা পাল। তিনি বলেন, “সভ্য সমাজ আমাদের মেনে নিতে চায় না। বাইরের সামাজিক অনুষ্ঠানে আমরা সেভাবে মেলামেশা করতে পারি না। এখানকার ছোট ছোট ছেলেমেয়েদেরও একই অবস্থা। রাতুল-অন্বেষা যে নজির তৈরি করল, তা আমরা ভুলব না।”
[প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে রাস্তা তৈরি করে নজির এই পঞ্চায়েতের]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.