বাবুল হক, মালদহ: দীর্ঘ বিবাহিত জীবনে সন্তান না হওয়ায় পড়শিরা বন্ধ্যা অপবাদ দিয়েছিল। এখানেই শেষ নয়, এনিয়ে যখন তখন গঞ্জনাও দেওয়া হত। সেই অপমানেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হলেন আদিবাসী দম্পতি। মৃতদের নাম সুশীল মুর্মু (৩২) ও বাসন্তী হেমব্রম (২৮)। সোমবার সকালে প্রতিবেশীরাই তাঁদের একসঙ্গে ঝুলতে দেখেন। ঘরের ভিতরে সিলিংফ্যানের সঙ্গে বাসন্তীদেবীর শাড়ির ফাঁসে ঝুলছিলেন দু’জনে। তাঁরাই থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। তবে এখনই আত্মহত্যার তত্ত্ব মানতে নারাজ পুলিশ। তদন্ত শুরু হয়েছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে গাজোল থানার চাকনগর পঞ্চায়েতের সুন্দরপুর গ্রামে।
এদিকে মেয়ে জামাইয়ের আত্মহত্যার খবর পেয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুর থেকে গাজোলে এসেছেন গৃহবধূর বাবা মাস্টার হেমব্রম। তিনি জানান, বছর তিনেক আগে সুশীলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেন তিনি। পেশায় কৃষক সুশীল এমনিতে বেশ ভাল। তাদের মধ্যে সুখী দাম্পত্যই ছিল। তবে তিন বছর হয়ে গেলেও সন্তানের মুখ দেখেনি মেয়ে জামাই। এনিয়ে নিজেরাও মানসিক অশান্তিতে ছিল। তবে প্রতিবেশীদের আচরণ ও কটূক্তি সেই অশান্তিকে অবসাদের পর্যায়ে নিয়ে যায়। তার থেকেই হয়তো দুজনে আত্মহত্যা করেছে। মাস্টারের কথায় সায় দিয়েছেন সুশীলের বাবা লক্ষ্মণ মুর্মু।
প্রতিবেশীদের দাবি, এমনিতে সুখী দাম্পত্য থাকলেও সন্তান না হওয়া নিয়ে তাঁদের মধ্যে প্রায়ই অশান্তি হত। সোমবার সকালে খেতে কাজে যাওয়ার সময়ই সুশীলকে ডাকতে গিয়েই আত্মহত্যার ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। ঘরের মধ্যে সিলিংফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছিল ওই দম্পতি। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ জানিয়েছেন, এক দম্পতির মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.