সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: রাতে প্রবল ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে চেয়েছিলেন। সেটাই কাল হল। ঘুমের মধ্যেই বেঘোরে মারা গেলেন এক দম্পতি। গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভরতি ওই দম্পতির একমাত্র ছেলে। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরে।
[ ঠান্ডায় কাঁপছে বৃষ্টিভেজা উত্তরবঙ্গ, মরশুমের প্রথম তুষারপাত টাইগার হিলে]
দিনভর আকাশের মুখভার। ঝিরঝিরে বৃষ্টি আর ঝোড়ো হাওয়ায় শীতের আমেজ রাজ্যে। দার্জিলিংয়ের টাইগার হিল আর সান্দাকফু ঢেকেছে বরফে। পশ্চিম বর্ধমানের কোলিয়াড়ি এলাকায় বরবারই বেশ জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়ে। রাতের দিকে তাপমাত্রা আরও কমে যায়। পাণ্ডবেশ্বরে ইসিএলের এবি পিট কোলিয়াড়ি কর্মী ছোটু ভুঁইয়া। স্ত্রী ও একমাত্র ছেলেকে নিয়ে থাকেন শহরের ভুঁইয়াপাড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সোমবার রাতে ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে উনুন জ্বালিয়ে শুয়েছিলেন ছোটু, তাঁর স্ত্রী প্রমিলা ও একমাত্র ছেলে বাবলা। মঙ্গলবার বেলা গড়িয়ে গেলেও তাঁদের আর কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। ঘরের দরজা-জানালাও বন্ধ ছিল। সন্দেহ হওয়ায় পাণ্ডবেশ্বর থানায় খবর দেন স্থানীয় বাসিন্দা। দরজা ভেঙে যখন ঘরে ঢোকে পুলিশ, তখনও উনুন জ্বলছিল। খাটের উপর পড়ে ছিল স্বামী-স্ত্রীর নিথর দেহ। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় মেঝেয় পড়েছিলেন একমাত্র ছেলে। তাঁকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভরতি করেছে পুলিশ। ছোটু ও তাঁর স্ত্রীর দেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তে।
প্রতিবেশীদের দাবি, বাইরেই শুধু নয়, রাতে বাড়ির ভিতরের ঘরের দরজা-জানলাও বন্ধ ছিল। বদ্ধ ঘরেই জ্বলছিল উনুন। অক্সিজেনের অভাবে দমবন্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন ছোটু ভুঁইয়া ও তাঁর স্ত্রী প্রমীলা। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের ডিসি অভিষেক মোদিও জানিয়েছেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে দমবন্ধ হয়েই মৃত্যু বলে মনে হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’ গত শীতেও দুর্গাপুরে একইভাবে দমবন্ধ হয়ে মারা গিয়েছিলেন একই পরিবারের তিনজন।
ছবি: উদয়ন গুহরায়
[ঘূর্ণিঝড় ‘ফেতাই’-এর প্রভাবে ঝিরঝিরে বৃষ্টি, দিঘায় উত্তাল সমুদ্র]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.