গৌতম ব্রহ্ম: পাহাড়ে ১০ বছর পর জিটিএ নির্বাচনে বোর্ড গঠন করতে চলেছে সেখানকার জনপ্রিয় নেতা অনীত থাপা। যিনি শেষদিকে জিটিএ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলেছেন। এবারও তাঁর দলই বোর্ড গঠন করবে। সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন নিয়ে জিটিএ ভোটে জিতেছে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা (BGPM)। আর তার প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করতেই বুধবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে গেলেন অনীত থাপা। বৈঠক শেষে জানালেন, ”পাহাড়বাসীকে বোঝাতে পেরেছি, দার্জিলিং বাংলার মধ্যেই। আমরা জিটিএ-র অসমাপ্ত কাজ নতুন উদ্যমে করতে চাই।” সূত্রের খবর, ১২ জুলাই জিটিএ-র বোর্ড গঠন হতে পারে। শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
গত ২৯ জুন জিটিএ ভোটের ফল প্রকাশিত হয়। দেখা যায়, সবাইকে পিছনে ফেলে সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে পাহাড়ে সদ্যগঠিত রাজনৈতিক দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। যে দল গুরুং-তামাংদের একদা সহকর্মী অনীত থাপার। এবার গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কাজকর্ম চালাবেন তিনিই। বুধবার সেই আলোচনা করতেই নবান্নে এসেছিলেন অনীত থাপা। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথাবার্তার পর বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ”আমি মুখ্যমন্ত্রীকে আবেদন জানিয়েছি, তিনি যেন শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন। তিনি রাজি হয়েছেন। আমরা হাতে হাত মিলিয়ে পাহাড়ে উন্নয়নের কাজ করব।”
প্রথম কাজ কী হবে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এতদিন জিটিএ-র নানা দপ্তরে একাধিক কার্যপদ্ধতি ভেঙে পড়েছে। সেসব মেরামত করে ঢেলে সাজানো প্রথম কাজ। অনীত থাপার কথায়, ”এতদিন পাহাড়বাসীকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু গত কয়েক বছরে পাহাড়বাসীর উন্নতি হয়েছে। পাহাড়ে আর বনধ হয় না। এমনকী এই ভোটও হয়েছে শান্তিপূর্ণভাবে। পাহাড় নিয়ে এতদিন সেন্টিমেন্টাল পলিটিক্স চলছিল। বারবার বঞ্চনা হয়েছে। তবে এবারের ভোটে আমরা পাহাড়বাসীকে বোঝাতে পেরেছি যে দার্জিলিংটা বাংলারই মধ্যে।” কিন্তু বিজেপি সাংসদ, বিধায়করা যে বারবার পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি তোলেন। এ নিয়ে অনীত থাপার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি কার্যত এড়িয়ে যান। তবে কি এত কিছুর পরও আলাদা রাজ্যের দাবির ভাবনা থেকে এখনও পুরোপুরি সরে আসেনি পাহাড়ের রাজনৈতিক দলের নেতারা? এই প্রশ্ন থেকেই গেল।
জিটিএ বোর্ড নিয়ে পাহাড়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ”ওরা চাইলে আমরা বাইরে থেকে সমর্থন দেব।” মুখ্যমন্ত্রীর জিটিএ অনুষ্ঠানে থাকা নিয়ে তিনি জানান, জিটিএ নির্বাচন ভালভাবে করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী সকলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। আগামী দিনে ভাল কাজ করার শুভেচ্ছাবার্তাও দিয়েছেন। ১০ বছর পর আবার পুরোদমে পাহাড়ে জিটিএ-র মাধ্যমে উন্নয়ন প্রক্রিয়া শুরু এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.