সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উনিশটিবার ম্যাট্রিকে ঘায়েল হয়ে শেষমেশ থামতে বাধ্য হয়েছিলেন সুকুমার রায়ের ‘সৎপাত্র’ গঙ্গারাম। তার থেকে ঠিক দুই ধাপ পিছিয়ে রয়েছেন নদিয়ার প্রদীপ হালদার। এই নিয়ে টানা ১৭ বার ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসলেন তিনি। প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছেন, তবু হাল ছাড়তে নারাজ। ভবিষ্যতে আবারও বসতে প্রস্তুত ৪৮ বছরের প্রৌঢ়। কারণ জীবনে থামতে শেখেননি তিনি। তাঁর কাছে অন্তবিহীন পথে চলাই জীবন। যে জীবনে তাঁর চোখে রয়েছে একটাই স্বপ্ন- এমবিবিএস-এর প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাস করে ডাক্তার হওয়া।
[জয়েন্ট এন্ট্রাস পরীক্ষার ফল প্রকাশ, প্রথম বিড়লা হাই স্কুলের দেবাদিত্য]
আজ থেকে নয়, এই চেষ্টা তিনি করে চলেছেন ২০০০ সাল থেকে। প্রতি বছরই বসেছেন ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষায়। সময়ের নিয়মে সংসার পেতেছেন। দুই মেয়ে এক ছেলেও হয়েছে প্রদীপবাবুর। সন্তানদের প্রতিপালনের জন্য অন্যের জমিতে ক্ষেতমজুরের কাজও করেন। মাস গেলে আয় হয় মাত্র ৪০০০ টাকা। তাই দিয়ে কোনওমতে চলে প্রদীপবাবুর সংসার। কিন্তু তা বলে স্বপ্ন দেখা ছাড়েননি ৪৮ বছরের মানুষটি। স্বপ্ন পূরণ করতেই আজও ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়ে চলেছেন তিনি।
ঘটনাচক্রে পশ্চিমবঙ্গে ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসার জন্য কোনও বয়সের উর্ধ্বসীমা এখনও পর্যন্ত নেই। তাই প্রদীপবাবুর এই চেষ্টায় বয়সের দিক থেকে কোনও বাধা নেই। তার সৌজন্যেই বিগত ১৭ বছর ধরে ডাক্তার হওয়ার চেষ্টায় ব্রতী তিনি। এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১,৭২৫-তম ব়্যাঙ্ক করেছেন নদিয়ার বাসিন্দা। কিন্তু তাঁর লক্ষ্য ৫০০-র মধ্যে ঠাঁই পাওয়া। যাতে রাজ্যেরই কোনও কলেজে ডাক্তারি পড়তে পারেন।
[প্রশ্নপত্র বিভ্রাটে বাতিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা পরীক্ষা
চাইলে অন্যপথে যেতেই পারতেন প্রদীপবাবু। ভর্তি হতে পারতেন কোনও বেসরকারি কলেজে। এতদিনের স্বপ্ন পূরণ করার তাগিদে টাকাও হয়তো কোথাও না কোথাও থেকে জোগাড় হয়ে যেত। সাম্প্রতিককালে রাজ্যে এমন বিপথে মেডিক্যালের প্রবেশিকা উতরে যাওয়ার অনেক নমুনাও মিলেছে। সিবিআই-এর কল্যাণে ফাঁস হয়েছে সেই জালচক্র। কিন্তু সে পথে যেতে নারাজ নদিয়ার ক্ষেতমজুর। পারলে এই পথেই পারবেন, এই বিশ্বাস তাঁর রয়েছে। তাই টানা ১৭ বার আশাহত হয়েও হাল ছাড়তে নারাজ প্রদীপ হালদার। রাস্তা কঠিন হলেও সৎ পথে লড়েই গন্তব্যে পৌঁছতে চান তিনি।
[অস্বস্তির গরম থেকে রেহাই, দক্ষিণবঙ্গে নামল বৃষ্টি]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.