দেবাদৃতা মণ্ডল, চুঁচুড়া: রাজনৈতিক সমাবেশ সেরে ফেরার পথে হুগলিতে আক্রান্ত দিলীপ ঘোষ। রবিবার বিজেপির রাজ্য সভাপতির গাড়ি ঘেরাও করে হামলার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। স্থানীয় চণ্ডিতলা থানা এলাকার কালীমোড়ের কাছে পৌঁছালে গাড়ি-সহ ঘেরাও হয়ে যান দিলীপ ঘোষ। তাঁর গাড়িতে ভাঙচুরের চেষ্টা করা হয়। তবে রাজ্য সভাপতির সঙ্গে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরাই সেই হামলা রুখে দেন। তাঁরাই উত্তেজিত জনতার ঘেরাটোপ থেকে দিলীপবাবুর গাড়িটিকে উদ্ধার করে কলকাতার দিকে রওনা হন। এই ঘটনার পর একপ্রকার প্রাণ হাতে করেই হুগলি ছাড়েন দিলীপ ঘোষ। গোটা ঘটনায় কালীমোড় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
এই হামলার ঘটনায় ইতিমধ্যেই তৃণমূল কর্মীদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, একদল লোক বিজেপি সভাপতির গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে, দিলীপ ঘোষ পালিয়ে বাঁচলেও ঘেরাও হয়ে যান অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তেজিত জনতা বাঁশ-লাঠি নিয়ে তাঁর গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। এই ঘটনায় আঘাত পেয়েছেন জয়বাবু। পরে স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে জয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্ধার করেন। তিনিও হামলার ঘটনায় তৃণমূলের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। যদিও বিজেপির অভিযোগ মানতে নারাজ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, এই ধরনের কোনও হামলার সঙ্গে দলীয় কর্মী-সমর্থকরা জড়িত নন। বিজেপি রথযাত্রা কর্মসূচির আগে জমি তৈরির জন্য এসব করছে।
এদিকে হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু। তাঁর পালটা অভিযোগ, ‘এটি পূর্ব পরিকল্পিত ঘটনা। দিলীপ ঘোষকে খুনের উদ্দেশ্যেই হামলা চালানো হয়েছে। উদ্দেশ্য সফল হয়নি। তবে জয় বন্দ্যোপাধ্যায় গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁর মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন তিনি। এবারে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেব। ইতিমধ্যেই হামলার খবর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে জানিয়েছি। এই হামলার প্রতিবাদে আগামিকালই পথে নামবে দল। এনিয়ে গোটা রাজ্যের পাশাপাশি কলকাতাতেও প্রতিবাদ মিছিল হবে।’
দলীয় সমাবেশে যোগ দিতে এদিনই চণ্ডীতলার মশাট বাজারে আসেন দিলীপ ঘোষ। সেখানে সভা শেষে ফেরার পথেই হামলার মুখে পড়ে তাঁর গাড়ি। এই সমাবেশে দাঁড়িয়েই দিলীপ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। এনআরসি বিতর্কে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘পালটা মার দিতে বিজেপি ভয় পায় না। একজন হিন্দু বাঙালি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী এনআরসি বিলের বিরোধিতা করছেন, এটা মানা যায় না। এই বিল কার্যকরী হলে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেওয়া বাঙালিরা এদেশে শরণার্থী হওয়ার সুযোগ পাবেন।’ পর্যবেক্ষক মহলের মত, বিতর্কিত মন্তব্য করার জেরেই উত্তেজিত জনতা তাঁর উপর হামলা চালায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.