সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: রেশন মিলছে তো? কোথাও কি খাদ্যাভাব রয়েছে? লকডাউনে অভাব মেটাতে আর কী করা যায়, বিডিওকে নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে তারই রূপরেখা তৈরি করলেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার। সোমবার ঝালদা এক নম্বর ও ঝালদা দু’নম্বর ব্লকের বিভিন্ন গ্রামের গৃহস্থের উঠোনে পাতা খাটিয়ায় বসে সামাজিক দূরত্ব মেনে সকলের সমস্যার কথা শুনলেন তিনি। সেই মোতাবেক সমাধানের পথ খুঁজে তা রূপায়নের নির্দেশ দিলেন বিডিওকে।
পুরুলিয়া জেলা পুলিশ খাদ্য সুরক্ষায় একটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে। লকডাউন চলাকালীন খাদ্যদ্রব্যের প্রয়োজনে ওই নম্বরে (৮১৪৫৫০০৩৫৮) ফোন করলেই পুলিশ বাড়িতে খাদ্যদ্রব্য বা রেশন পৌঁছন দেবে। জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, “গ্রামীণ এলাকায় বর্তমান পরিস্থিতি কী তা জেনে আমাদের টিম কাজ করছে। আমি সেইসব কাজ দেখতে গিয়েছিলাম। কোনও সমস্যা রয়েছে কিনা তা সরাসরি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে শুনে সমাধান করা হয়েছে।” এই জেলায় অভুক্তদের হদিশ পেতে আগেই ‘ভালনারেবল এরিয়া ম্যাপ’ তৈরি করেছে প্রশাসন। সেই মানচিত্র দেখেই প্রশাসনের টিম ব্যবস্থা নিচ্ছে।
এদিন স্বয়ং জেলাশাসকই সেই মানচিত্রের মধ্যে থাকা ঝালদা এক নম্বর ব্লকের সারজুমাতু গ্রামে যান। কিছুদিন আগে এই গ্রাম শিরোনামে এসেছিল। সোনা, জমির দলিল বন্ধক নয়, গ্রামের ১৩ জন দিনমজুর অভাবে তাঁদের রেশন কার্ডই বন্ধক দিয়ে দিয়েছিলেন মহাজনের কাছে। সেখান থেকে পাওয়া ঋণ শোধ করতে না পারায় রেশন কার্ড হাতে পাননি। ফলে লকডাউন পরিস্থিততিতে খাদ্যের জোগান বন্ধ হয়ে যায়। প্রশসানের কাছে অভিযোগ জমা পরতেই তদন্ত করে মহাজনের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে গ্রাহকদের হাতে দ্রুত ওই কার্ড তুলে দেওয়া হয়। এদিন এ প্রসঙ্গে জেলাশাসক দিনমজুরদের বলেন, কার্ড বন্ধক রাখা যেমন অপরাধ তেমন কাউকে তা দেওয়া বিধিসম্মত নয়। পাশাপাশি, এদিন তাদের কাছ থেকে অভাবের কথা শুনে তাদেরকে যাতে একশ দিনের কাজে যুক্ত করা যায় সেই বিষয়েও বিডিওকে নির্দেশ দেন। সেইসঙ্গে জয় বাংলা পেনশন প্রকল্পে যুক্ত করার কথাও বলেন। বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন একজন তাঁর সমস্যার কথা বললে ‘মানবিক’ প্রকল্পে তাঁর সরকারি ভাতার ব্যবস্থারও নির্দেশও দেন জেলাশাসক।
দেখুন ভিডিও:
ছবি: সুনীতা সিং
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.