অভিষেক চৌধুরী,কালনা: বিলম্বিত বোধোদয় নাকি বিবেক দংশন! দাবিমতো পারিশ্রমিক দিতে না পারায় প্রেসক্রিপশনে লেখা ওষুধের নাম কেটে দিয়ে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন কালনার চিকিৎসক জ্যোতির্ময় দাস। সংবাদমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে সেই অমানবিক খবর। রীতিমতো সমালোচনার ঝড় ওঠে নেটদুনিয়ায়। বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রাও। বিতর্কের মুখে পড়ে ওই চিকিৎসকের যেন সুমতি হয়েছে। এবার নিজে থেকেই ওই বৃদ্ধার বাড়িতে গিয়ে তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন বিতর্কিত চিকিৎসক।
প্রসঙ্গত,কালনার (Kalna) নান্দাই গ্রামের বৃদ্ধা মালতী দেবনাথ বেশ কিছুদিন ধরেই মাথা ও ঘাড়ের যন্ত্রণায় ভুগছিলেন।বৃদ্ধার একমাত্র ছেলে সামান্য রোজগারের আশায় মুম্বইয়ে কাজ করেন। সত্তর বছর বয়সি বৃদ্ধা তাঁর পুত্রবধূ এবং নাতনিকে নিয়ে কষ্টেই দিন গুজরান করেন। গত ৪ ফেব্রুয়ারি তিনি প্রথমবার অভিযুক্ত চিকিৎসক জ্যোতির্ময় দাসের (Jyotirmay Das) কাছে চিকিৎসা করাতে যান। সেদিন জ্যোতির্ময় দাসের ফি মিটিয়েও দিয়েছিলেন তিনি। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে বেশ কিছু পরীক্ষানিরীক্ষাও করান। তারপর ১৩ ফেব্রুয়ারি মালতীদেবীর রিপোর্ট দেখাতে ফের জ্যোতির্ময় দাসের চেম্বারে যান তাঁর এক প্রতিবেশী। জানা যায়, ওই বৃদ্ধা ব্রেন স্ট্রোক ও স্পন্ডিলাইটিসে আক্রান্ত। প্রথমে চিকিৎসার জন্য বেশ কিছু ওষুধও লিখে দিয়েছিলেন কালনা মহকুমা হাসপাতালের প্রাক্তন চিকিৎসক। কিন্তু এরপরই তিনি জানতে পারেন, মালতীদেবীর প্রতিবেশী তাঁর পারিশ্রমিকের টাকা আনেননি। অভিযোগ,এরপরই প্রেসক্রিপশনে লেখা ওষুধের নাম কেটে দেন অভিযুক্ত ওই চিকিৎসক।
যা নিয়ে রীতিমতো সমালোচনার মুখে পড়তে হয় জ্যোতির্ময় দাস নামের ওই চিকিৎসককে। বিতর্কের মুখে পড়ে মত বদলান তিনি। বৃহস্পতিবার নিজেই চলে যান ওই বৃদ্ধার বাড়িতে। চিকিৎসকদের দাবি, ভুল বুঝতে পেরেই তিনি ওই বৃদ্ধার চিকিৎসা করতে এসেছেন।স্বাভাবিকভাবেই ওই চিকিৎসককে বাড়িতে দেখে প্রথমে হতবাক হয়ে যান বৃদ্ধা।তারপরেই চিকিৎসক জ্যোতির্ময় দাস কথা বলেন মালতী দেবীর সঙ্গে।
এই বিষয়ে জ্যোতির্ময় দাস বলেন,”মানবিকতার কথা ভেবে আগেই আমার রোগীকে দেখা উচিত ছিল। যেভাবে খবরটা ছড়িয়েছে সবটাই তো আর ঠিক নয়। এই কারণে মনটা খারাপও হয়। আজ সকালে চেম্বারেও বসিনি। তাই আগে ওনাকে দেখে আমার মনের শান্তি যদি হয় তবেই আমি চেম্বারে বসবো।পাড়া থেকে চাঁদা তুলে যে ওনার চিকিৎসা করানো হচ্ছে এই বিষয়টা আমি জানতাম না। উনি বর্তমানে এখন ভীষণ ভালো আছেন। নিজেও খুব খুশি হয়েছেন। আমার সামর্থ্য অনুযায়ী ওনার চিকিৎসা চালিয়ে যাবো।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.