ছবিতে আক্রান্ত সুলতাদেবী ও তাঁর ছেলে অমিয়।
আকাশনীল ভট্টাচার্য, বারাকপুর: ঘোলায় এবার মদ্যপের তাণ্ডবের শিকার পুলিশকর্মীর স্ত্রী, সন্তান। বাড়ি লাগোয়া ওষুধের দোকানে বসছে মদের আসর। প্রতিবাদ করে মদ্যপ দেওরের হাতে আক্রান্ত বউদি ও ভাইপো। অভিযুক্ত দেওর সুব্রত ঘোষকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযোগ, দিনের পর দিন ওষুধের দোকানে মদের আসর বসাচ্ছে দেওর। রবিবার সকালেও একই কাজ চলছিল। এই দেখেই বউদি সুলতা ঘোষ প্রতিবাদ করেন। সঙ্গেসঙ্গেই বউদিকে দেখে মদ্যপ সুব্রত তেড়ে আসে, গালিগালাজ শুরু করে বলে অভিযোগ। সুলতাদেবী বাড়িতে ঢুকে দরজা বন্ধ করতেই খেপে যায় সুব্রত। দরজা ভেঙে লোহার রড দিয়ে ভাইপো ও বউদিকে পেটাতে শুরু করে। রডের আঘাতে সুলতাদেবীর মাথা ফেটেছে। ভাইপো অমিয় ঘোষের কান ফেটে গিয়েছে। এরপর আক্রান্ত গৃহবধূ দেওরের বিরুদ্ধে ঘোলা থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ সুব্রত ঘোষকে গ্রেপ্তার করে। গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তর ২৪পরগনার ঘোলা থানার মুড়াগাছা এলাকায়।
জানা গিয়েছে, আক্রান্ত গৃহবধূর স্বামী অসিত কুমার ঘোষ একজন এসআই। তিনি বিধাননগর কমিশনারেটে কর্মরত। অসিতবাবুর ছোটভাই সুব্রত ঘোষ এমনিতে কিছুই করে না। তাই বাড়ি লাগোয়া ওষুধের দোকান করে দিয়েছেন দাদা। অভিযোগ, সেই দোকানেই দীর্ঘদিন ধরে মদের আসর বসাচ্ছে দেওর। এমনই অভিযোগ করেন সুলতাদেবী। বেশ কয়েকবার নিষেধ করেও কোনও লাভ হয়নি। স্বামীকেও বিষয়টি জানান তিনি। তবে কোনও নিষেধকেই পাত্তা দেয়নি সুব্রত ঘোষ। শনিবার রাতে ফের বন্ধুবান্ধব ডেকে দোকানের ভিতরেই মদের আসর বসায় সে। সেইসঙ্গে চলে গালিগালাজ। সব দেখেও মুখ বন্ধ করেছিলেন সুলতাদেবী। রবিবার সকাল ফের দেখেন দোকান খুলেই মদ খেতে শুরু করেছে দেওর। সঙ্গে রয়েছে বন্ধুরাও। সকালবেলায় এই অনাচার মানতে পারেননি ওই গৃহবধূ। সঙ্গেসঙ্গেই দেওরকে এসব বন্ধ করতে বলেন। ততক্ষণে বউদিকে দেখে তেড়ে এসেছে সুব্রত। তড়িঘড়ি মা-কে বাড়ির ভিতরে নিয়ে যায় বছর পনেরোর অমিয়। অভিযোগ এরপরেই শুরু হয় মদ্যপ সুব্রতর তাণ্ডব। সে দাদার বাড়ির দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়ে। হাতে থাকা লোহার রড বসিয়ে দেয় বউদির কপালে। এলোপাথাড়ি আঘাতে সুলতাদেবীর কপাল ফেটে যায়। মাকে বাঁচাতে গিয়ে ততক্ষণে মদ্যপ কাকার কবলে অমিয়। তাকেও রডের বাড়ি মারে সুব্রত। আঘাতে অমিয়র কান ফেটে যায়। এরপরই রণে ভঙ্গ দিয়ে এলাকা ছাড়ে অভিযুক্ত।
সুলতাদেবী প্রাথমিক ধাক্কা সামলে নিজেই ছেলেকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ছোটেন পানিহাটি স্টেটজেনারেল হাসপাতালে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ঘোলা থানায় গিয়ে দেওরের বিরুদ্ধে হামলার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই এদিন সুব্রত ঘোষকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
[নির্ভয়াকাণ্ডের ছায়া রাজ্যে, গণধর্ষণের পর গৃহবধূর যৌনাঙ্গে ঢোকানো হল রড]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.