Advertisement
Advertisement
Mid day meal

ডিমের দাম সাড়ে সাত! সিদ্ধ নয়, কাটা অমলেট পড়ুয়াদের পাতে

মিড ডে মিল খাওয়াতে হিমশিম খাচ্ছে জেলার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে প্রাথমিক স্কুল ও হাই স্কুলগুলি।

Egg price hike, school in tension for Mid day meal
Published by: Paramita Paul
  • Posted:December 10, 2024 5:04 pm
  • Updated:December 10, 2024 5:53 pm  

টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: একটা ডিম ৭ টাকা ৫০ পয়সা। আলুর কেজি দাঁড়িয়েছে ৩০-৩২ টাকা। এদিকে, প্রাক প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য মাথাপিছু বরাদ্দ ৫ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে মাত্র ৬ টাকা ১৯ পয়সা। আর ষষ্ঠ থেকে অষ্টমের পড়ুয়াদের জন্য বরাদ্দ ৮ টাকা ১৭ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে মাত্র ৯ টাকা ২৯ পয়সা! মূল্যবৃদ্ধির বাজারে এই বরাদ্দে হিমশিম খাচ্ছে জেলার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে প্রাথমিক স্কুল ও হাই স্কুলগুলি। পরিস্থিতি যা তাতে গরিবের সংসারে জেলার স্কুলগুলিতে সবাইকে ডিমের স্বাদ দিতে ওমলেট কেটে ঝোল করে পড়ুয়াদের পাতে দেওয়া হচ্ছে।

বাঁকুড়া সদর ব্লকের দোতলা বিশ্বকর্মা প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুমনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের স্বীকারোক্তি, “ডিমের দাম যা দাঁড়িয়েছে তাতে পড়ুয়াদের জন্য মিড ডে মিল চালাতে সমস্যা হচ্ছে।” বাঁকুড়া শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের লালজি রাজা মেমোরিয়াল প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাহুল সেনাপতির মতে, “যে হারে ডিম ও আনাজের দাম বেড়েছে, তাতে মিড ডে মিল চালানোই দুষ্কর।” তাঁর সংযোজন, “ফি মাসে ২২ দিন স্কুলে রান্না হলে ডাল, তেল, মশলা, ডিম, আনাজপাতি, সয়াবিন, বাসন মাজার সাবান, গ্যাস সিলিন্ডার মিলিয়ে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা খরচা হয়। প্রতি মাসে ঘাটতি থাকে ৫০০- ৬০০ টাকা। যা আমাদের পকেট থেকে দিতে হয়।” যদিও এবিষয়ে বাঁকুড়ার ওসি (মিড ডে মিল) বিপ্লব চক্রবর্তী মুখ খুলতে নারাজ। বাঁকুড়ার যুগীপাড়া দয়াময় প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক দীনবন্ধু ভূষণ জানালেন, কম পড়ুয়া হওয়ায় মিড ডে মিলের খরচ তুলনায় বেশি লাগছে। তা-ও সপ্তাহে একদিন ডিম ও মাঝে মধ্যে মাংস খাওয়ানো হচ্ছে ছেলে, মেয়েদের। জেলার সব প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও মানছেন, “নির্ধারিত বরাদ্দে পুষ্টিকর খাবার দিতে সত্যিই সমস্যা হচ্ছে।”

Advertisement

গত নভেম্বর পর্যন্ত মিড ডে মিলে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম পর্যন্ত পড়ুয়া পিছু বরাদ্দ ছিল ৮ টাকা ১৭ পয়সা। প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম পর্যন্ত বরাদ্দ ৫ টাকা ৪৫ পয়সা ছিল। মিডডে মিলের বরাদ্দ চলতি ডিসেম্বরে শেষবার বাড়ানো হয়েছে। বরাদ্দ সংকটে জেরবার জেলার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিও। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক বড়জোড়ার এক অঙ্গনওয়াড়ির কর্মী বললেন, “সরকারিভাবে ডিমের জন্য বরাদ্দ সাড়ে ছটাকা। কিন্তু এখন ডিমের দাম সাত টাকা পঞ্চাশ পয়সা! শিশু ও প্রসূতি মায়েদের রান্না করা খাবার দিতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। বরাদ্দের টাকাও সময়ে মিলছে না। দোকানেও টাকা বকেয়া রয়েছে।”

অঙ্গনওয়াড়িতে সোম, বুধ ও শুক্র- সপ্তাহে তিনদিন ভাত, সেদ্ধ ডিম, আলুর ঝোল দেওয়াই নিয়ম। মঙ্গল, বৃহস্পতি, ও শনিবার আনাজ ও সয়াবিন দিয়ে খিচুড়ি দেওয়া হয়। বাঁকুড়ায় ২২টি ব্লকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার ৭০০। উপভোক্তা শিশু তিন লক্ষাধিক। শিশুবিকাশ প্রকল্পে অঙ্গনওয়াড়ি চালানো হয়। এই কেন্দ্রে এক থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত শিশুদের খিচুড়ি খাওয়ানো হয় মিড ডে মিলে। সপ্তাহে তিনদিন শিশুরা ডিম পায়। আর অপুষ্ট শিশুদের রোজ ডিম দেওয়ার কথা। কিন্তু সীমিত বরাদ্দে নিয়ম মানতে নাজেহাল অবস্থা হচ্ছে বলে জানালেন বিষ্ণুপুরের অঙ্গনওয়াড়ির কর্মী কৃষ্ণা চক্রবর্তী। ইতিমধ্যেই অঙ্গনওয়াড়ির খাবারের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবিও উঠেছে। সম্প্রতি ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল অঙ্গনওয়াড়ি ওয়াকার্স অ্যান্ড হেল্পার্স ইউনিয়নে’র তরফে বাঁকুড়ার অঙ্গনওয়াড়ি প্রকল্প আধিকারিককে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। বাঁকুড়ার অঙ্গনওয়াড়ি প্রকল্প আধিকারিক নিলাঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। শীঘ্রই সমস্যা মিটে যাবে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement