ব্রতদীপ ভট্টাচার্য: ভোট কিনতে কোনওভাবেই মদের ব্যবহার নয়। এই বার্তাই গোটা দেশজুড়ে বলবৎ করতে চাইছে নির্বাচন কমিশন। প্রতিবারই ভোটের সময় মদের উপর নজরদারির নির্দেশ থাকে নির্বাচন কমিশনের। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যের ক্ষেত্রে বাড়তি পদক্ষেপ করছে কমিশন। রাজ্যে মদের গতিবিধিতে নজর রাখতে ইতিমধ্যেই ভোটের ডিউটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে আবগারি কর্মীদের। এবার আরও একধাপ এগোল কমিশন। এবার কয়েকশো নতুন মদের দোকানে সাময়িকভাবে তালা পড়তে চলেছে। ভোট প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত ২০১৯ সালে চালু হওয়া মদের দোকানগুলির লেনদেন ও যাবতীয় প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হল।
সম্প্রতি আবগারি দপ্তরের তরফ থেকে রাজ্যের সমস্ত জেলাশাসক ও আবগারির আধিকারিকদের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নির্বাচনের কমিশনের নির্দেশ অনুসারে ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে পশ্চিমবঙ্গ আবগারি আইন ২০০৩-এর ৪(কিউ) ধারা অনুযায়ী যাদের লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত সেগুলির সমস্ত কাজকর্ম সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। এমনকী নতুন দোকান তৈরির জন্য জমি বা লাইসেন্সের সমস্ত প্রক্রিয়াও বন্ধ রাখতে হবে। প্রশাসন সূত্রে খবর, চলতি বছরের শুরু থেকে সম্প্রতি রাজ্যজুড়ে শহরতলি ও গ্রামে আবগারি আইনের ৪(কিউ) ধারায় প্রচুর লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এই লাইসেন্সের ক্ষেত্রে দোকানে দেশি ও বিদেশি মদ একসঙ্গে রাখা যায়। দপ্তরের নির্দেশ অনুযায়ী ১ জানয়ারি থেকে এই ধরনের লাইসেন্সপ্রাপ্ত যে দোকানগুলি চালু হয়েছে বা হবে সেগুলিই ভোটপর্ব না মেটা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। যার জেরে রাজ্যজুড়ে কপালে হাত পড়েছে কয়েকশো দোকান মালিকের।
আবগারি দপ্তর সূত্রে খবর, এই বিজ্ঞপ্তির জেরে পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রায় ৩৫টি দোকান বন্ধ হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের প্রভাব পড়েছে গোটা তিরিশেক দোকানের উপর। উত্তর ২৪ পরগনায় প্রায় চল্লিশটি দোকান এই বিজ্ঞপ্তির ফলে বন্ধ হচ্ছে। সব মিলিয়ে গোটা রাজ্যে কয়েকশো নতুন মদের দোকান সাময়িকভাবে বন্ধ থাকছে। কিন্তু এই নির্দেশের কারণ কী? আবগারি দপ্তরের ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভোটপর্ব চলাকালীন মদের জোগানে রাশ টানতে কমিশনের নির্দেশে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক এক আধিকারিকের ব্যাখ্যা, “যে লাইসেন্সগুলি সাময়িকভাবে বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেগুলি মূলত শহরতলি বা গ্রামীণ এলাকায়। শহর এলাকায় আবগারি কর্মীরা কড়া নজর রাখতে পারেন। কিন্তু শহরতলি বা গ্রাম বিশেষ করে প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে নজরদারি চালানো কঠিন। তাই সেগুলি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.