সৌরভ মাজি, বর্ধমান: লকডাউনে ফুলের দোকান খোলার ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিক্রি নেই। আবার জারবেরার মত ফুল বিদেশে রপ্তানি করেই মূলত চাষিরা আয় করেন। কিন্তু সেই রপ্তানি বন্ধ রয়েছে করোনা আতঙ্কে। ফলে চরম সমস্যায় ফুলচাষিরা। প্রায় এক লক্ষ টাকার জারবেরা ফুল কেটে রাস্তায় ফেলে দিতে বাধ্য হয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের রায়নার নন্দনপুরের এক ফুলচাষি গুণধর সাহানা।
তিনি জানান, এই ফুল মূলত দুবাইয়ে রপ্তানি করা হয়। কিন্তু এখন তা বন্ধ। আবার স্থানীয় বাজারেও চাহিদা নেই। মানুষজন বাইরে বেরচ্ছেন না। উৎসব-অনুষ্ঠানও বন্ধ। ফলে কে কিনবে ফুল। কম দামে বিক্রি করলেও কেনার লোক নেই। তাই বাধ্য হয়ে কেটে ফেলে দিতে বাধ্য হয়েছেন। এক পিস জারবেরা ফুলের বর্তমান বাজার দর ৮ টাকা। বিয়ে বা অনুষ্ঠানের মরশুমে এই ফুলের প্রতি পিস বিক্রি হয় ১৫ টাকাতেও। এদিন কয়েক হাজার পিস জারবেরা ফুল তুলে ফেলে দিয়েছেন গ্রিনহাউস নার্সারির মালিক গুণধরবাবু। তাঁর নার্সারিতে প্রতিদিন এক হাজার পিসেরও বেশি জারবেরা ফুল হয়। দীর্ঘদিন লকডাউন থাকায় লোকসানের পরিমাণ কত হয় বোঝাই যাচ্ছে।
গুণধরবাবুর দুইটি গ্রিনহাউস নার্সারি রয়েছে। মোট খরচ হয়েছে ২৬ লক্ষ টাকা। তার মধ্যে অর্ধেক রাজ্য সরকারির উদ্যানপালন দপ্তরের সাবসিডি পেয়েছেন। হল্যান্ডের ফুল বলে পরিচিত জারবেরা চাষ করলে চার বছর পর্যন্ত প্রতিদিন ফুল পাওয়া যায়। এছাড়াও তাঁর নার্সারিতে জিনিয়া, বারমাসের গাঁদা-সহ অন্যান্য মরশুমী ফুলচাষও হয়। ফুল তুলে তা কলকাতায় পাঠান গুণধরবাবু। জারবেরা ফুল দুবাই-সহ অন্যান্য দেশেও রফতানি হয়। লকডাউনের ফলে ফুল কলকাতায় পাঠানো যাচ্ছে না। রপ্তানিও হচ্ছে না। ফলে বিশাল ক্ষতির মুখে পড়েছেন তিনি। ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে মোটা বেতনের চাকরির করেনি। ফ্যাক্টরি চালু করেন। আর নেশার টানে ফুল চাষ শুরু করেন গুণধরবাবু। ধান চাষের জন্য বর্ধমান বিখ্যাত হলেও ফুল চাষ করে নজির গড়েন গুণধরবাবু। লকডাউনে সেই চাষও এবার বিপন্ন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.