সৌরভ মাজি, বর্ধমান: বালিখাদান তৈরি ও তার জন্য গ্রামের ভিতর দিয়ে রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর বিবাদ। রণক্ষেত্রের চেহারা নিল পূর্ব বর্ধমানের গলসি থানার বিক্রমপুর এলাকা। মুড়ি-মুড়কির মত চলল বোমাবাজি। আর রবিবারের এই ঘটনায় বালিখাদানের যুক্ত থাকায় ফের নাম জড়াল স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের। গলসি-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির স্বামী ও স্থানীয় শিড়রাই গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আবারও প্রকাশ্যে চলে এল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গলসির বিক্রমপুর এলাকায় বালিখাদান নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদ চলছে। মূলত বখরা নিয়েই ঝামেলা ছিল। রবিবার যা চরম পর্যায়ে পৌঁছয় বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। বিক্রমপুরে দামোদরের চরে একটি বালিখাদান রয়েছে। তার অদূরে আরও একটি বালিখাদান তৈরি করা ও সেখানে পৌঁছতে রাস্তা তৈরি করা ঘিরেই বিবাদ।
অভিযোগ, এই নিয়ে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রোকেয়া বেগমের স্বামী বাদল সরকার এবং তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের উপপ্রধান গৌরাঙ্গ সরকারের বিবাদ চরমে ওঠে। নতুন বালিখাদানে যাওয়ার জন্য বাদল সরকার ও তাঁর অনুগামী বলে পরিচিত শিড়রাই পঞ্চায়েতের সদস্য শেখ জাহাদুর হোসেন, মহসিন চৌধুরি, নির্মল বৈরাগ্য, খোকন পাল-সহ আরও কয়েকজন জোর করে রাস্তা তৈরি করতে চাইছে। যাতে আপত্তি রয়েছে গৌরাঙ্গ সরকারের অনুগামীদের। গৌরাঙ্গর বিরুদ্ধে পালটা অভিযোগ, পুরনো বালিখাদানের সঙ্গে বোঝাপড়া থাকায় গৌরাঙ্গ ও তাঁর অনুগামীরা এই রাস্তা তৈরিতে বাধা দিয়ে অশান্তি করছেন।
এর আগেও রাস্তা তৈরিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। এদিন ফের রাস্তা তৈরিকে কেন্দ্র এদিন গোলমাল বাঁধে। স্থানীয়দের দাবি, রবিবার কমপক্ষে ২০টি বোমা পড়েছে। বাদলের অভিযোগ, “ওই এলাকার একজন বৈধ ইজারাদারের বালি খাদানে যাওয়ার রাস্তা তৈরিতে জমি দিয়েছেন এলাকার মানুষ। রাস্তা তৈরিতে বাধা দিচ্ছে গৌরাঙ্গর লোকজন। তাই নিয়েই বিবাদ। শুনেছি বোমাবাজিও হয়েছে এদিন।” গৌরাঙ্গর দাবি, বেআইনি বালিখাদান তৈরি করছে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির স্বামী। এদিন রাস্তা তৈরি করতে গেলে গোলমাল বাঁধে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে ৫টি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি মোটরবাইকও উদ্ধার করা হয়েছে। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি জাকির হোসেন দাবি করেছেন, ঘটনায় তৃণমূলের কেউ জড়িত বলে তাঁর জানা নেই। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিও এই ঘটনায় তাঁর স্বামীর জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.