Advertisement
Advertisement
Falta

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক সন্দেহে স্ত্রীকে খুন! প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা, ফলতায় দগ্ধ মহিলার মৃত্যু রহস্যের কিনারা

দু'দিনের মধ্যেই খুনের কিনারা করলেন তদন্তকারীরা।

Falta woman allegedly killed by husband over suspecting extra marital

সেই দম্পতির ছবি

Published by: Suhrid Das
  • Posted:March 8, 2025 3:29 pm
  • Updated:March 8, 2025 3:29 pm  

সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: দু’দিনের মধ্যেই কিনারা হল ফলতায় জ্বলন্ত খড়ের গাদায় উদ্ধার হওয়া দগ্ধ মহিলার মৃত্যুরহস্যের। দম্পতির মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েনের জেরেই পরিকল্পনা করে স্ত্রীকে খুন করে আগুনে পুড়িয়ে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছিলেন মৃতার স্বামীই। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ করতেন স্বামী। সেই থেকে স্ত্রীকে খুন করেন স্বামী।

বুধবার সকালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতা থানার বুদা গ্রামের এক নির্জন জায়গায় খড়ের গাদায় আগুন জ্বলতে দেখা গিয়েছিল। স্থানীয়রা ওই আগুন নেভানোর পর সেখানে এক মহিলার অগ্নিদগ্ধ দেহ দেখতে পান। চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। প্রথম থেকেই পুলিশের সন্দেহ ছিল ওই মহিলাকে খুন করে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছিল আততায়ী। শুরু হয় তদন্ত। মৃতার শরীরের প্রায় ১০০ শতাংশ আগুনে পুড়ে যাওয়ায় চেনা যাচ্ছিল না। পরিচয় জানতে পুলিশ আশপাশ এলাকার বিভিন্ন থানায় খোঁজখবর শুরু করে।

Advertisement

হদিশ মেলে বিষ্ণুপুর থানার ন’হাজারী এলাকার বাসিন্দা মৃত মহিলার মায়ের। মৃতার শরীর থেকে পাওয়া কানের দুল, গলার হার ও জুতো দেখে মেয়েকে শনাক্ত করেন তিনি। জানা যায়, মৃতার নাম মুসলিমা বিবি (৩৫)। মেয়েকে মোটরবাইকে চাপিয়ে জামাই গোলাম আলি শেখকে বিষ্ণুপুর থেকে বেরোতে দেখেছিলেন তিনি। ফলতা থানার পুলিশ এরপরই গোলামের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জোনাল) মিতুনকুমার দে জানান, শুক্রবার রাতে ফলতার গোপালপুরে বাড়িতে ফিরতেই গোলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি জানান, যে নির্জন এলাকায় খড়ের গাদায় মুসলিমার দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছিল, সেই এলাকায় পৌঁছতে নয়ানজুলির উপর বাঁশের একটি সাঁকো পেরতে হয়। পুলিশ নিশ্চিত হয় ওই খড়ের গাদার কাছে মুসলিমা কোনও পরিচিত ব্যক্তির সঙ্গেই গিয়েছিলেন। আগেও বেশ কয়েকবার স্বামীর সঙ্গে ওই এলাকায় গিয়েছিলেন মুসলিমা। ধৃত গোলামকে ধারাবাহিক জেরা করতেই একসময় তিনি খুনের কথা স্বীকার করেন।

জানা গিয়েছে, ২০২১ সালে ওই দম্পতির বিয়ে হয়। তাঁদের বছর দুয়েকের এক শিশুকন্যাও রয়েছে। কিন্তু স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক সন্দেহ করেছিল ধৃত ব্যক্তি। তা নিয়েই দু’জনের মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছিল। ২০২৩ সাল থেকে মুসলিমা বাপেরবাড়িতে থাকতেন। যদিও শিশুকন্যার জন্য দম্পতির মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ এবং কথাবার্তাও চলত। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই গোলাম স্ত্রীকে বুঝিয়ে পরিচিত ওই নির্জন স্থানে নিয়ে যান। ওই নয়ানজুলিতেই মুসলিমাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন। তারপর রাজারহাটের এক পেট্রোল পাম্প থেকে বোতলে করে পেট্রোল নিয়ে ফেরেন ঘটনাস্থলে। তারপর মৃত স্ত্রীকে খড়ের গাদার মধ্যে ঢুকিয়ে ওই গাদায় পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন অভিযুক্ত।

ধৃতকে শনিবার ডায়মন্ড হারবার এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। হেফাজতের পর ধৃতকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণও করতে চান তদন্তকারী আধিকারিকরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement