চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: “দু’বেলা উনুন জ্বলে না। ক’দিন খেতে পাইনি। চিকিৎসা করাতে পারছি না”, এভাবেই হাহাকার প্রকাশ করলেন আসানসোল পুরনিগমের ৮৫ নম্বর ওয়ার্ডের মহিশীলা কলোনির বাসিন্দা দীপক ভট্টাচার্য। পেটের তাগিদে সরকারি সাহায্যের অপেক্ষায় গোটা পরিবার।
আসানসোলের মহিশীলা কলোনির বাসিন্দা দীপক ভট্টাচার্য। ৬৮ বছরের দীপক বাবুর সঙ্গে থাকেন তাঁর দিদি মিনতি এবং তাঁদের একমাত্র ভাইঝি অনিতা। দীপকবাবু জানিয়েছেন, তিনি বিয়ে করেননি। দিদি মিনতিরও বিয়ে হয়নি। আগে তাঁরা দাদা-বৌদির কাছেই থাকতেন। দীর্ঘদিন যাবৎ গৃহশিক্ষকতা করতেন। দাদা-বৌদি বেঁচে থাকতে কোনও কিছুর অভাব ছিল না। কিন্তু দাদা-বৌদির মৃত্যুর পরেই আকাশ ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবারের মাথায়। উপার্জন বন্ধ হয়েছে। সঞ্চিত অর্থ খরচ করতে করতে সঞ্চয়ের ভাঁড়ারেও টান পড়েছে।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বয়স বেড়েছে দীপকবাবুর। অসুস্থতার কারণে ছাত্র পড়ানোও বন্ধ হয়েছে। একমাত্র ভাইঝি অনিতা মানসিক ভারসাম্যহীন। দিদি মিনতিদেবী চলাফেরা করতে পারেন না। চোখেও দেখতে পান না। ফলে তিন সদস্যের পরিবারের রোজগার শূন্য। ব্যাংক, পোস্ট অফিসেও কোনও সঞ্চিত অর্থ নেই। ভরসা বলতে পাড়ার লোক ও আত্মীয়রা। রেশন কার্ড থাকায় বরাদ্দ চাল মেলার কথা। কিন্তু রেশন দোকানে গিয়ে তা আনার ক্ষমতা নেই পরিবারের কারও। ফলে দু’মুঠো চাল ফুটিয়ে খাওয়ার পরিস্থিতি নেই। অগত্যা প্রশাসনের সহযোগিতা চাইছেন তাঁরা। স্থানীয় কাউন্সিলর শিবদাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, সবার ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়৷ তবে ওই পরিবারকে যাতে অর্ধাহারে থাকতে না হয়, তার ব্যবস্থা নেব। চেয়ারম্যান বলেছেন, “বার্ধক্য ভাতা, সরকারি অন্যান্য ভাতার ব্যবস্থা করা যায় কিনা সেটা দেখছি। মানুষগুলোকে তো আর মরতে দেওয়া যায় না!” কী হবে ভবিষ্যৎ, কতদিনে হাল ফিরবে এখন সেই অপেক্ষায় পরিবার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.