সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পড়াশোনা বেশিদূর করা ছিল না। তাই তেমন চাকরি মেলেনি। তবে তা ভেবে তো আর ছোট্ট সন্তানকে ফেলে রাখলে চলবে না। তাই কঠিন হলেও জীবন সংগ্রাম চালিয়ে গিয়েছিলেন তারকেশ্বর পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। বাসের কন্ডাক্টর হিসাবে পেশা নির্বাহ করে ছেলেকে পড়াশোনা করিয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন ছেলে। কিন্তু সেই ছেলের বিরুদ্ধে উঠল অভিযোগের আঙুল। বাবার দাবি, ভরপেট তাঁকে খেতেও দেন না ছেলে। তাই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
তারকেশ্বর (Tarakeswar) পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পদ্মপুকুরের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। স্ত্রী এবং একমাত্র সন্তানকে নিয়েই সংসার। দারিদ্র্য ছিল। তবে সংসারে সুখের কোনও অভাব হয়নি কোনওদিন। মাঝে ছেলে স্কুলে চাকরি পান। তবে ২০১৪ সালে স্ত্রীর মৃত্যু হয়। তারপর থেকেই যেন সব বদলে গেল। একটানা ৪৫ বছর ধরে বাসের কন্ডাক্টর হিসাবে কাজ করেছেন তিনি। তবে এখন আর কাজের ক্ষমতা নেই। তাই ছেলেই তাঁর একমাত্র ভরসা। আর সেখানেই যত গণ্ডগোল।
রবীন্দ্রনাথবাবুর দাবি, শিক্ষক ছেলে মাসে মাত্র দেড় হাজার টাকা দেন তাঁকে। এদিকে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নানা অসুস্থতা দেখা দিয়েছে। উচ্চ রক্তচাপ, মধুমেহ রয়েছে তাঁর। সেসব ওষুধ কিনতেই বেশিরভাগ টাকা খরচ হয়ে যায়। বাকি টাকা দিয়ে আধবেলাও ভাল করে পেট ভরে না। বারবার ছেলেকে সেকথা জানিয়েছেন তিনি। তবে ছেলে তাতে কান দেয়নি বলেই দাবি বৃদ্ধের। এমনকী ছেলে নানারকম ছলচাতুরি করে বসত বাড়ি বিক্রি করে টাকা হস্তগত করার চেষ্টা করছে বলেও দাবি প্রৌঢ়ের। বাধ্য হয়ে প্রতিবেশীদের কথামতো পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
রবীন্দ্রনাথবাবু যে খুব কষ্ট করে ছেলের পড়াশোনার বন্দোবস্ত করেছিলেন তা স্বীকার করে নিয়েছেন তাঁর ছেলে। তাঁর দাবি, “বাবা পুলিশের কাছে গিয়েছেন জানি। আমাকে ৬ জনের সংসার চালাতে হয়। তাই এর চেয়ে বেশি টাকা দেওয়ার সামর্থ্য আমার নেই।” প্রতিবেশীরা যদিও যুবকের নিন্দায় সরব। একজন শিক্ষক হয়ে কীভাবে একাজ করছেন তিনি, সে প্রশ্নই উঠছে বারবার। ছাত্রছাত্রীদের কী শেখাবেন তিনি, উঠছে সে প্রশ্নও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.