সুদীপ রায়চৌধুরি: ভোটের প্রথম দফার পুনরাবৃত্তি দ্বিতীয় পর্বেও! ভোটদানে অনীহার ছবিটা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে! রাজ্যে ফের কমল ভোটদানের হার। নির্বাচন কমিশনের রিপোর্ট বলছে, দার্জিলিং, রায়গঞ্জ ও বালুরঘাটে তিনটি আসনে গড়ে ভোট পড়েছে ৭৬.৫৮ শতাংশ। ২০১৯ সালে এই তিন কেন্দ্রে ভোটদানের গড় হার ছিল ৮০.৯ শতাংশ।
দার্জিলিংয়ে বরাবরই উৎসবের মেজাজে ভোট হয়। এবার কিন্তু পাহাড়ে চিত্রটা ছিল অন্যরকম। স্থানীয় রাজনৈতিক মহল বলছে, ভোট হয়েছে নিঃশব্দে। অন্যান্যবার সুবাস ঘিসিং, বিমল গুরুং, বিনম তামাং-দের ‘হুইপ’ মেনে ভোট হয়। এবার কিন্তু একেবারে ‘স্বাধীন’ভাবে ভোট হয়েছে। অথচ এবারই নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্ততার অভাব দেখা গেল পাহাড়ে। দার্জিলিংয়ে ভোট পড়েছে ৭৪.৭৬ শতাংশ। গতবার যেখানে ভোট পড়েছিল ৭৯.৩৩ শতাংশ। যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ বলছে, প্রতিবার রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিশ্রুতির শুকনো চিড়েতে এবার আর পাহাড়ের মন ভেজানো যায়নি। তাই ভোটের প্রতি কার্যত বীতশ্রদ্ধ ছিল পাহাড়বাসী! তারই প্রতিফলন ভোটবাক্সে ঘটল। কম পড়ল প্রায় ৫ শতাংশ ভোট। এর সুবিধা কোন দল পাবে, তা অবশ্য স্পষ্ট হবে ৪ জুন।
অন্যদিকে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ভোট পড়েছে ৭৬.১৮ শতাংশ। যেখানে গতবার ছিল ৭৯.৮৮ শতাংশ। প্রায় তিন শতাংশ কম ভোট পড়েছে এবছর। পাহাড়ের মতো এখানে অবশ্য কারণ নিয়ে বিশেষ ধন্দ নেই। ভোটের দিন বেশ গরম ছিল সেখানে। তাপপ্রবাহও হয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বুথমুখী হয়েছেন অপেক্ষাকৃত কম ভোটার। একই অবস্থা বালুরঘাটে। ভোট পড়েছে ৭৯.০৯ শতাংশ। গতবার এই হার ছিল ৮৩.৮১ শতাংশ। কমেছে প্রায় ৪ শতাংশ। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, গরমের জন্যই এই দুই কেন্দ্রে ভোটদানের হার কম।
প্রসঙ্গত, বাংলার ৩ আসনে গড়ে ভোট পড়েছে ৮১.৯১ শতাংশ। ২০১৯-এ এই তিন কেন্দ্রে গড় ভোট পড়েছিল প্রায় ৮৪ শতাংশ। এবার প্রায় আড়াই শতাংশ কম ভোট পড়েছে। কিন্তু পর পর দুই দফাতেই ভোটদানের হার নিম্নমুখী হওয়ার ট্রেন্ডে রাজনীতিকদের কপালে ভাঁজ পড়েছে। তবে কি রাজনীতির এই খেলায় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উপর থেকে ক্রমেই আস্থা হারাচ্ছে আমজনতা? প্রশ্ন অনেক, উত্তর দেবে কে?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.