সৈকত মাইতি, তমলুক: খেজুরির একই এলাকায় সাইবার প্রতারণার শিকার ২। খোয়া গেল প্রায় ৭ লক্ষ টাকা। প্রতারিতদের মধ্যে একজন অবসর প্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক, একজন চাকরিপ্রার্থী। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
ছোট থেকেই ক্লাসের একেবারে প্রথম সারির ছাত্রী খেজুরি জাহানাবাদ এলাকার যুবতী। স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যাথমেটিক্সে ফার্স্ট ক্লাস সেকেন্ড। বিএসসি, এমএসসিতে সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার পর কম্পিউটার এবং ফার্মেসিতে তিনি ডিপ্লোমা করেন। একাধিক চাকরির পরীক্ষায় বসে সফলভাবেই উত্তীর্ণ হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কোনও ভাবেই একটা কাজের জোগাড় করতে পারছিলেন না। চাকরির সন্ধানে হন্নে হয়ে ঘুরেও কোনওরকম কোনও সুরাহা না হওয়ায় অনলাইনে শিক্ষাদানের উপর জোর দিয়েছিলেন বছর ৩৫ এর ঐ যুবতী। একাধিক জায়গায় তার বায়োডাটা পাঠিয়ে রেখেছিলেন। আর তাতেই ঘটে যায় বিপত্তি। চাকরি দেওয়ার টোপ দিয়ে প্রতারকদের একটি দল তার কাছ থেকে সিকিউরিটি ডিপোজিট বাবদ প্রায় ৫ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত জুন মাসের ৬ তারিখ ওই যুবতীর কাছে একটি ফোন আসে। বলা হয়, পার্ক স্ট্রিটের একটি অফিস থেকে ফোন করা হয়েছে। মোটা মাইনের একটি চাকরির অফার করা হয় তাঁকে। এক্ষেত্রে থার্ড পার্টি ওই সংস্থার মাধ্যমেই এই নিয়োগ করা হবে বলে জানিয়ে সিকিউরিটি ডিপোজিট, পরীক্ষার ফি, ট্রেনিং বাবদ বিগত প্রায় দুমাস ধরে দফায় দফায় ৫ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকেরা। এমন অবস্থায় প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে গত ২২ আগস্ট তমলুক সাইবার থানার দ্বারস্থ হয়েছেন প্রতারিত ওই যুবতী। তিনি জানিয়েছেন, অনিমেষ ঘড়াই এবং কার্তিক দাস পরিচয় দিয়ে দুই ব্যক্তি এই বিপুল পরিমাণ টাকা প্রতারণা করেছে।
অন্যদিকে, অনলাইন প্রতারণার শিকার হয়ে এক লাখ টাকা খোয়ালেন ওই এলাকারই অবসরপ্রাপ্ত এক স্কুল শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র মিশ্র। খেজুরি থানার কামারদা এলাকার বাসিন্দা ৭৮ বছরের ওই অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক। গত সোমবার ২৮ আগস্ট সকালে বাজার থেকে এসে বাড়িতে বসে পেপার পড়ছিলেন তিনি। সেই সময় অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি নিজেকে রাষ্ট্রায়ত্ব একটি ব্যাংকের কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে ফোন করেন। এটিএম কার্ডের ভ্যালিডিটি শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়ে ঐ শিক্ষককে প্রতারণার ফাঁদে ফেলা হয়। প্রতারকদের নানান কথার জালে পড়ে ওই অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক তার এটিএম পাঞ্চ করে সমস্ত রকমের তথ্য শেয়ার করে দেন। আর তাতেই দুই দফায় ওই বৃদ্ধ শিক্ষকের অ্যাকাউন্ট থেকে এক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় অভিযুক্তরা। এই সম্পর্কে বিকাশবাবু জানিয়েছেন, “বিস্তারিতভাবে পুলিশের কাছে গিয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।” এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার অমরনাথ কে জানিয়েছেন, এমন ধরনের সাইবার প্রতারণা ঠেকাতে নানান ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘটনা তদন্ত চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.