অরূপ বসাক, মালবাজার: শিকার ধরতে গিয়ে কুয়োয় পড়ে গেল একটি চিতাবাঘ। মালবাজার মহকুমার রাজাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ হাঁসখালির ঘটনা। আর এই চিতাবাঘকে কুয়ো থেকে তুলতে হিমশিম খেতে হল বনকর্মীদের। প্রায় তিন ঘন্টার চেষ্টায় অবশেষে উদ্ধার হয় চিতাবাঘটি। সকাল থেকে এই চিতাবাঘ দেখতে প্রায় গোটা গ্রামের মানুষ ভিড় জমান কুয়োর আশেপাশে। চলল সেলফি তোলার ধুম।
স্থানীয় বাসিন্দা দেলুয়ার হোসেন বলেন, “সোমবার সুধীরচন্দ্র রায়ের চা বাগানে শ্রমিকেরা কাজ করছিলেন। চা বাগানে কীটনাশক স্প্রে করার জন্য বাগানের মধ্যে থাকা কুয়ো থেকে জল তুলতে যান দু’জন। কুয়োতে বালতি নামাতেই গর্জন শুরু করে চিতাবাঘটি। আর তাতেই আতঙ্কিত হয়ে ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যান শ্রমিকেরা।” স্থানীয়দের দাবি, এই এলাকায় চিতাবাঘের উপদ্রব নিত্যদিনের ঘটনা। রাত হলেই চা বাগান থেকে বেরিয়ে গৃ্হস্থের গরু, ছাগল নিয়ে যায়। রবিবার রাতে হয়তো কোন শিকার ধরতে যায় চিতাবাঘটি। ঠিক সেই সময় হয়তো কুয়োয় পড়ে যায় সে।
খবর জানাজানি হতেই গ্রামের মানুষেরা চিতাবাঘ দেখতে ভিড় করেন চা বাগানে। খবর দেওয়া হয় কাঠামবাড়ি এবং মালবাজার বনদপ্তরের অফিসে। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে আসেন বনদপ্তরের আধিকারিক এবং কর্মীরা। বনকর্মীরা প্রথমে কুয়োর চারদিক জাল দিয়ে ঘিরে দেয়। কুয়োর সামনে পাতা হয় বাঘ ধরার খাঁচাও।
শুরু হয় কুয়ো থেকে চিতাবাঘ উদ্ধারের চেষ্টা। কিন্তু চিতাবাঘটিকে তুলতে গিয়ে রীতিমতো কালঘাম ছুটে যায় বনকর্মীদের। বারবার জাল থেকে কুয়োয় পড়ে যায় চিতাবাঘটি। আর তাতেই অসুস্থ হয়ে পড়ে চিতাবাঘটি। অবশেষে প্রায় ঘণ্টাতিনেকের চেষ্টার পর খাঁচা বন্দি করা হয় চিতাবাঘটিকে।
মালবাজার ওয়াইল্ড লাইফের রেঞ্জার বিভূতিভূষণ দাস বলেন, “কুয়োটি খুব সরু হওয়ায় চিতাবাঘটিকে তুলতে এত সময় লাগল। তবে বনকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে চিতাটিকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করেছেন। পাশেই যেহেতু বৈকন্ঠপুর জঙ্গল, সেই জঙ্গল থেকে খাবারের খোঁজেই এই চা বাগান এলাকায় চলে আসে চিতাবাঘটি। শিকার ধরার সময় অসতর্ক হয়ে কুয়োয় পড়ে যায়। আমরা চিতাবাঘটিকে গরুমারায় নিয়ে যাবো। সেখানে চিতাবাঘটির স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হবে। সুস্থ থাকলে মঙ্গলবার গরুমারার জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.