সৌরভ মাজি, বর্ধমান: বিহারের (Bihar) প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির (BJP) সাংসদ সুশীল মোদিকে (Sushil Modi) খুনের হুমকি। স্পিড পোস্টে চিঠি পাঠিয়ে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে। প্রেরক হিসাবে নাম রয়েছে চম্পা সোমের। চিঠিতে নিজেকে তৃণমূল নেত্রী (TMC Leader) পরিচয় হিসেবে দিয়েছেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমানের রায়ান গ্রামের বাসিন্দা বলে উল্লেখ রয়েছে ওই চিঠিতে। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে খুনের হুমকির চিঠির বিষয়ে জানিয়েছেন সুশীল মোদি। ঘটনার বিষয়ে পাটনা পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন বিহারের এই বিজেপি নেতা। সেখানকার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এদিকে চম্পা দাবি করেছেন, তাঁকে ফাঁসাতে বর্ধমানেরই এক আইনজীবী এই কাজ করেছেন। সিবিআই আদালতের বিচারককে হুমকি চিঠি দিয়ে সেই আইনজীবী গ্রেপ্তার হয়েছেন কিছুদিন আগে।
এদিন সুশীল মোদি জানিয়েছেন, ওই চিঠিতে লেখা হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ভারতবর্ষের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন। সুশীল মোদিকে নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) ও অমিত শাহর (Amit Shah) পোষা কুকুর বলেও চিঠিতে লেখা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নীতীশ কুমার জিন্দাবাদ লেখা হয়েছে। চিঠির শেষ লাইনে লেখা হয়েছে, ‘৩১ আগস্ট বা তার আগে আপনাকে (সুশীলকে) খুন করা হবে।’ চিঠির নিচে চম্পা সোম (সোমা) ও মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছে। তবে কোনও স্বাক্ষর বা হাতের লেখা নেই। ৩১ আগস্টের মধ্যে খুনের হুমকির কথা লেখা হলেও চিঠিটি এদিন পেয়েছেন সুশীল মোদি। চিঠি লেখার তারিখ দেওয়া রয়েছে ১৬ আগস্ট ২০২২।
এদিন মোবাইল নম্বর সূত্র ধরে চম্পা সোমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বর্ধমান আদালতের ল’ক্লার্ক। তিনি বলেন, ‘‘আমি ঠিক করে ইংরেজিই লিখতে পারি না। ওইভাবে ইংরেজিতে খুনের হুমকি দেব কীভাবে।’’ তিনি অভিযোগের আঙুল তুলেছেন বর্ধমানের এক আইনজীবীর দিকে। কিছুদিন আগে গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে জামিন না দিলে আসানসোল সিবিআই আদালতের বিচারককে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি চিঠি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ওই আইনজীবী সুদীপ্ত রায়ের বিরুদ্ধে। বর্ধমান ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের হেড ক্লার্ক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের নামে ওই হুমকি চিঠি দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ তদন্তে নেমে সুদীপ্তর কথা জানতে পারে। তাকে গত ৩০ আগস্ট গ্রেপ্তার করেছে। বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছে।
চম্পা সোম এদিন জানান, গ্রেপ্তার হওয়ার দিন সাতেক আগে তাঁর সঙ্গে সুদীপ্তর বিবাদ হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে ফাঁসাতে এটা ওরই কাজ বলে মনে হচ্ছে। কেউ নিজের নাম ঠিকানা, মোবাইল নম্বর দিয়ে হুমকি দেবে না। আমাকে ফাঁসাতে আমার নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর দিয়ে ওই করেছে বলেই মনে হচ্ছে।’’
বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সদন তা বলেন, ‘‘কোনও উন্মাদ ছাড়া এই কাজ কেউ করবে না। কোন ল’ক্লার্ক নিজের পরিচয় দিয়ে এটা করবে বলে আমরাও বিশ্বাস করি না। এর পিছনে অন্য কারও চক্রান্ত থাকতে পারে। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক সেটা। তবে আমরা মনে করছি এটা ওই ল’ক্লার্ক করতে পারেন না।’’ পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন জানিয়েছেন, বিহার পুলিশ এখনও এই বিষয়ে যোগাযোগ করেনি। যোগাযোগ করলে সহযোগিতা করবে জেলা পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.