আকাশনীল ভট্টাচার্য, বারাকপুর: উত্তর ২৪ পরগনার ঘোলার চেয়ার কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরই গা ঢাকা দিয়েছিল মালিক৷ তবে তাতেও বিশেষ লাভ হল না৷ অবেশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ল চেয়ার কারখানার মালিক অনুজ সান্তালিয়া। বুধবার রাতে বারাণসী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে নিউ বারাকপুর থানার পুলিশ। ট্রানজিট রিমান্ডে বারাকপুরে নিয়ে আসা হচ্ছে তাকে৷
১১ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকাল সাড়ে বারোটা নাগাদ হঠাৎই আগুন লাগে উত্তর ২৪ পরগনার ঘোলার একটি প্লাস্টিক চেয়ার কারখানায়। সেই সময় কারখানায় কাজ করছিলেন প্রায় ৬৯ জন শ্রমিক। চোখের সামনে দাউদাউ করে কারখানা জ্বলতে দেখে প্রাণ বাঁচাতে তড়িঘড়ি কারখানা থেকে বেরোতে থাকেন শ্রমিকরা। ৬৪ জন শ্রমিক বাইরে বেরোতে পারলেও, বাকি পাঁচজনের পক্ষে বেরোনো সম্ভব হয়নি৷ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে একে একে ঘটনাস্থলে যায় দমকলের ৩৫ টি ইঞ্জিন। প্রায় ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময়ের চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ঘোলার ওই প্লাস্টিক চেয়ার তৈরির কারখানা পরিদর্শনও করেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। আগুন নিভে গেলেও, নিখোঁজ হয়ে যান কারখানার পাঁচজন শ্রমিক। ঘটনার তিন দিন পর ১৫ ফেব্রুয়ারি উদ্ধার হয় নিখোঁজ শ্রমিকদের দেহাংশ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর চারেক আগে আরও একবার আগুন লাগে ওই কারখানায়। ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। অর্থাৎ আগের ঘটনা থেকে কার্যত শিক্ষা নেয়নি কারখানা কর্তৃপক্ষ। তবে কেন বারবার একই ঘটনা, প্রশ্ন ওঠে কারখানার অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়েও। আদৌ কারখানাটির বৈধ লাইসেন্স ছিল কিনা, পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা ছিল কিনা তা নিয়ে শুরু হয় তদন্ত। ঘটনার পর থেকেই এলাকাছাড়া হয়ে যায় কারখানার মালিক অনুজ সান্তলিয়া। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু করে নিউ বারাকপুর থানার পুলিশ। ১০ দিন পর বারাণসী পুলিশের সহায়তায় সেখান থেকে অভিযুক্ত অনুজকে গ্রেপ্তার করে নিউ বারাকপুর থানার পুলিশ। সেখান থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে বারাকপুরে নিয়ে আসা হবে অভিযুক্তকে। ঘটনার পর দীর্ঘদিন কেটে গেলেও শ্রমিকদের মধ্যে এখনও আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। কারখানা ভস্মীভূত হয়ে যাওয়ায় কর্মহীন বহু শ্রমিক। আর্থিক সাহায্যের অপেক্ষায় মৃত পাঁচ শ্রমিকের পরিবার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.