ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: চকবাজারে বিশাল মিছিল করে মোর্চার শক্তি প্রদর্শন। পাহাড়ের সব দলকে নিয়ে এগোতে চাইলেও, মোর্চার এই কর্মসূচি এড়িয়ে যায় জিএনএলএফ। পাশাপাশি গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে মোর্চার নেতৃ্ত্ব দেওয়ার ধরনেও অন্যান্য দলগুলি বিরক্ত। বিড়ম্বনার মধ্যেই শাসক শিবিরে হানা দিয়েছে বিমল গুরুংয়ের দল। কালিম্পংয়ের দুই কাউন্সিলর তাদের শিবিরে যোগ দিয়েছে বলে দাবি মোর্চা নেতৃত্বর। এদিকে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে শনিবার সিকিম পরিবহণ সংস্থা বাস বন্ধ করে দেয়।
২৪ ঘণ্টা আগে দলের সুপ্রিমো প্রকাশ্যে এসে আস্ফালন দেখিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আরও বড় আন্দোলন হবে। বিমল গুরুংয়ের কথা মতো শনিবার কাজ শুরু করে দেয় মোর্চা সমর্থকরা। শনিবার সকাল থেকে পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় মিছিল হয়। মিছিল এসে পৌঁছয় চকবাজারে। প্রায় ১০ হাজার সমর্থকের মিছিল ডিএম অফিসে যাওয়ার চেষ্টা করে। গত সপ্তাহে এমন এক মিছিল থেকে দার্জিলিং রণক্ষেত্রর চেহারা নিয়েছিল। পুলিশ-প্রশাসন সতর্ক থাকায় এদিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছিল। বিশাল জমায়েতে শক্তি প্রদর্শন করলেও, মোর্চার এই কর্মসূচিতে পাহাড়ের দলগুলির ঐক্য প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এদিন মিছিলে গরহাজির ছিল জিএনএলএফ। মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুং জানিয়েছিলেন পাহাড়ে দলগুলি তাদের নেতৃ্ত্বে আন্দোলন হবে। মোর্চার এই সিদ্ধান্তে অন্য দলগুলির সঙ্গে যে তাদের দূরত্ব বাড়ছে তা জিএনএলএফের এই পদক্ষেপে অনেকটা পরিষ্কার। তবে মোর্চাকে স্বস্তি দিয়েছে সিপিআরএম এবং হরকা বাহাদুর ছেত্রীর জাপ। দুই দলের সমর্থকরা মিছিলে ছিলেন বলে দাবি মোর্চা নেতৃত্বর।
পাহাড়ে মিছিলে শক্তি প্রদর্শনের পাশাপাশি শাসক দলের ওপর চাপ আরও বাড়িয়েছে মোর্চা। কালিম্পং পুরভোটে এবার দুজন তৃণমূল কাউন্সিলর জিতেছিলেন। ঘাসফুলের টিকিটে জয়ী ভীম আগরওয়াল এবং মহম্মদ আসিফ আনসারি এদিন মোর্চায় যোগ দেন। এমনকী দুই তৃণমূলত্যাগী নেতা কালিম্পংয় তাদের মিছিলে হাঁটেন বলে দাবি মোর্চা নেতৃত্বর। এনিয়ে পাহাড় তৃণমূলের সভাপতির রাজেন মুখিয়া বক্তব্য, দুজনের পদত্যাগের কথা তিনি শুনেছেন। তবে তাঁদের কেউ পদত্যাগপত্র জমা দেননি। পাহাড়ের তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, মোর্চা প্রতিদিন তাদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে। বাড়ি পোড়ানো, মারধরের হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু পুলিশ নিরাপত্তা দিতে পারছে না।
পাহাড় নিয়ে এই ডামাডোলের মাঝে বাংলা-সিকিমের মধ্যে যোগাযোগের শেষ রাস্তাও বন্ধ হয়ে গেল। নিরাপত্তার অজুহাতে শিলিগুড়ি-সিকিম বাস আপাতত চলবে না বলে জানায় সিকিম পরিবহণ সংস্থা। যার ফলে বিপাকে পড়েছেন পর্যটকদের পাশাপাশি বহু সাধারণ মানুষ। এদিকে গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে বিভিন্ন জায়গা থেকে সমর্থন বাড়ছে মোর্চার। অসমের বোড়ো জঙ্গিরা গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পাশে থাকার কথা বলেছেন। এই ইস্যুতে বাংলা-অসম সীমানায় মশাল মিছিল হয়। অল অসম গোর্খা স্টুডেন্ট ফোরামও গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে। বাংলার নম্বরের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করে ওই সংগঠন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.