সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গোপন ডেরা থেকেই অনুগামীদের চাঙ্গা করার চেষ্টায় বিমল গুরুং। এক সাক্ষাৎকারে মোর্চা সভাপতি প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রত্যাঘাতের ডাক দিয়েছেন। গুরুংয়ের অভিযোগ পুলিশের দমননীতির ফলে তাঁদের দুই সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে। প্রশাসনকে চাপে রাখতে রবিবার ডুয়ার্সে ১২ ঘণ্টার বনধ ডেকেছে মোর্চা। গুরুং গলা ছাড়লেও, মোর্চার জোটসঙ্গী বিজেপি ফের বেসুরো হয়েছে। পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি সমর্থনযোগ্য নয়। আরও একবার রাজ্য বিজেপির অবস্থানের কথা স্পষ্ট করে দিলেন দিলীপ ঘোষ। তবে বিজেপি রাজ্য সভাপতি পাহাড়ের অশান্তির জন্য রাজ্যকে কাঠগড়ায় তুলেছেন।
বনধ ডেকে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার একেবারে শাঁখের করাত অবস্থা। কেন্দ্র গোর্খাল্যান্ডের ব্যাপারে কোনও ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে না। রাজ্য প্রশাসনিক ও রাজনৈতিকভাবে মোর্চার মোকাবিলা করছে। রাজ্য বিজেপিও গোর্খাল্যান্ড নিয়ে মোর্চার পাশে নেই। গোর্খাল্যান্ড ইস্যুকে হাইজ্যাক করতে নেমে পড়েছে হরকা বাহাদুর ছেত্রীর জাপ ও জিএনএলএফ। ক্রমশ কোনঠাসা হতে থাকায় হিংসার রাস্তা নিয়েছে মোর্চা। এটাই যে তাদের অস্তিত্বরক্ষার সম্বল তা ঘুরে-ফিরে বুঝিয়ে দিয়েছেন বিমল গুরুং। গোপন এক আস্তানা থেকে মোর্চা সভাপতি ফের কর্মীদের উসকানি দিয়ে চলেছেন। গুরুং পাহাড়বাসীকে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এসে প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ পুলিশ বাড়ি বাড়ি ঢুকে অত্যাচার চালাচ্ছে। পুলিশের এই দমন নীতির জন্য দুই মোর্চা সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে। প্রশাসনকে চাপে রাখতে এবার ডুয়ার্সে বনধ তাস খেলল মোর্চা। পাহাড়ের ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার ডুয়ার্সে ১২ ঘণ্টার বনধ ডেকেছে বিমল গুরুংয়ের দল। সেই কর্মসূচি সফল করতে গরুবাথানে সরকারি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় মোর্চা সমর্থকরা। পাহাড় অশান্ত থাকায় পর্যটকদের বড় অংশ এখন ডুয়ার্সমুখী। মোর্চার এই আচমকা ফতোয়ায় পর্যটকদের দুর্ভোগ বাড়তে পারে।
অজ্ঞাত স্থান থেকেও গুরুং হুঙ্কার ছাড়লেও, ক্রমশ রাজনৈতিকভাবে তিনি একঘরে হয়ে পড়ছেন। গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে মোর্চার জোটসঙ্গী বিজেপি অন্য মেরুতে রয়েছে। এদিন বাঁকুড়ায় একটি দলীয় কর্মসূচিতে গিয়ে দিলীপ ঘোষ যা বলেছেন তাতে মোর্চার চিন্তা বাড়তে বাধ্য। বিজেপি রাজ্য সভাপতি স্পষ্ট করে দিয়েছেন পৃথক রাজ্যের দাবিকে তারা মানেন না। তবে রাজ্য সরকারকে এই ইস্যুতে একহাত নিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর অভিযোগ, পাহাড়ে বিভাজনের রাজনীতি করছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি জিটিএ নির্বাচন না করে প্রশাসক বসানো নিয়েও রাজ্যের সমালোচনা করেছেন দিলীপ ঘোষ। বিমল গুরুংয়ের বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় অবশ্য দিলীপ মোর্চা সভাপতির পাশে দাঁড়িয়েছেন। ঘোলা জলে নেমে বিজেপির জাতীয় সচিব রাহুল সিনহা জানান, আলোচনার মাধ্যমে পাহাড় পরিস্থিতির সমাধান করতে হবে। দরকার হলে বিজেপি মধ্যস্থতা করতেও রাজি বলে জানান রাহুল সিনহা। তবে গোর্খাল্যান্ড নিয়ে বিজেপিতে দ্বিমত রয়েছে তা স্পষ্ট হচ্ছে পাহাড়ের বিজেপি নেতৃত্বর অবস্থানে। দলীয় লাইন উপেক্ষা করে এদিন দার্জিলিং জেলা বিজেপির কর্মীরা মোর্চার সঙ্গে পথে নামেন।
ভিডিওয় দেখুন কীভাবে মোর্চা সমর্থকরা তাড়া করছে পুলিশকে-
ভিডিও সৌজন্যে- সব্যসাচী ভট্টাচার্য
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.