সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: উচ্চশিক্ষা দপ্তরের নির্দেশ সত্ত্বেও দুই অধ্যাপকদের পদোন্নতি সংক্রান্ত প্রাপ্ত অর্থ জোর করে দু’বছর ধরে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে বাগনান কলেজের অধ্যক্ষ ডক্টর বাদল কুমার মাইতির বিরুদ্ধে। শুধুমাত্র প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই এই অর্থ অকারণে আটকে রাখার অভিযোগ তুলেছেন ওই দুই অধ্যাপক। এই বিষয়ে বাগনান কলেজের প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক অংশুল গুপ্তাকে প্রশ্ন করায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর সাংবাদিকতার এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
[ ৮ জুন উচ্চ মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশ, জানাল সংসদ ]
জানা গিয়েছে, গত দুবছর আগে কলেজের দুই পূর্ণ সময়ের অধ্যাপক চম্পক চক্রবর্তী ও উৎপল নাগের পদোন্নতি হয়। সেই মতো তাঁদের বেতনও বৃদ্ধি পায়। কিন্তু তা সত্ত্বেও গত দু’বছর যাবৎ তাঁদের বর্ধিত বেতন কলেজ অধ্যক্ষ জোর করে আটকে রেখেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। গত দু’বছর ধরে এই দু’জন শিক্ষকের প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই নিয়ে তাঁরা কলকাতা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। উচ্চ আদালত আবেদনকারীদের পক্ষে রায় দিয়ে উচ্চশিক্ষা দপ্তরকে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশ দেন। উচ্চশিক্ষা দপ্তর এই বিষয়ে এক ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করে। বৈঠকের পর গত ১৬ মে আবেদনকারী অধ্যাপকদের সমস্ত প্রাপ্য বকেয়া ৭ দিনের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়ার জন্য বাগনান কলেজ অধ্যক্ষ ডক্টর বাদল কুমার মাইতিকে নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে বলা হয়, নির্দেশ অমান্য করা হলে বকেয়া অর্থের উপর ২ শতাংশ হারে সুদ বহন করতে হবে কলেজ অধ্যক্ষকে। এবং সেই ক্ষেত্রে কলেজের প্রশাসনকে জানিয়ে দেওয়া হয়, এমন হলে যেন তারা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কিন্তু উচ্চশিক্ষা দপ্তরের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও উক্ত দুই কলেজ অধ্যাপক তাঁদের প্রাপ্য বকেয়া অর্থের কোনও অংশই পাননি বলে জানান।
[ ডন রামবাবুর বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি, আতঙ্ক ছড়াল খড়গপুরে ]
কলেজের বর্তমান প্রশাসক উলুবেড়িয়ার মহকুমা শাসক অংশুল গুপ্তার কাছে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি প্রশ্ন শুনেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বিষয়টি পাশ কাটিয়ে তিনি উলটে ধমক দেন। এই বিষয়ে সাংবাদিকতার এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন করতে থাকেন এবং এইরকম সাংবাদিকতা করার কোনও প্রয়োজন নেই বলে কড়া ভাষায় একপ্রকার ধমক দেন তিনি।
তবে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের ডিরেক্টর অফ পাবলিক ইনস্ট্রাকশন জয়শ্রী রায়চৌধুরী জানান, বিষয়টি তাঁরা খতিয়ে দেখবেন। সেই ক্ষেত্রে যদি কোনও অনিয়ম ধরা পড়ে তাহলে উচ্চ শিক্ষা দপ্তর সেই বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এই বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ বাদল কুমার মাইতিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান বিষয়টি নিয়ে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন, তাই এই বিষয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করবেন না। এখন এই দুই কলেজ অধ্যাপক তাঁদের প্রাপ্য বকেয়া পেতে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের হস্তক্ষেপের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.