ফাইল ছবি
সুমিত বিশ্বাস: লকডাউনের মাঝে কয়েকটি কর্মক্ষেত্রকে সচল করতে কেন্দ্রের নির্দেশিকা থাকলেও এরাজ্যে চটকল খোলেনি। তবে নির্দেশিকা মেনে শুরু হয়েছে ১০০ দিনের কাজ। পুরুলিয়া, হাওড়া, মুর্শিদাবাদ-সহ বিভিন্ন জেলায় পুকুর খনন অথবা বাড়ি নির্মাণের কাজে নেমেছেন দিনমজুররা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে, মাস্ক অথবা কাপড়ে মুখ ঢেকে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই চলছে কাজ।
পুরুলিয়া জেলায় ১৭০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে সোমবার ১৩৩টিতে শুরু হয়েছে। বাংলা আবাস যোজনা, হাপা খনন, নার্সারি-সহ ১৬৮৭ টি প্রকল্পের কাজে নেমেছেন শ্রমিকরা। ঝালদায় সেই কাজ পরিদর্শন করলেন জেলাশাসক রাহুল মজুমদার। তিনি বলেন, “আজ থেকে নিয়ম মেনে কাজ শুরু হয়েছে। সবাই মিলে আবার কর্মযজ্ঞে ফিরেছি।” একইভাবে কাজ শুরু হয়েছে মুর্শিদাবাদেও। জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক জানিয়েছেন তাঁদের টার্গেট আগামী একমাসের মধ্যে ১০ লক্ষ কর্মসংস্থান করা। হাওড়া জেলায় কাজে নামার আগে শ্রমিকরা মাস্ক বেঁধে নেন। হাত ধুয়ে নেন স্য়ানিটাইজার দিয়ে।
এদিকে, করোনা কাঁটাতেও একশো দিনের কাজে দারুণ পারফরম্যান্স বাংলার। ১০০ দিনে কাজের গড় ৫০ ছুঁয়েছে। গত আর্থিক বছরের(২০১৯–২০) নিরিখে ‘মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মনিশ্চয়তা’ প্রকল্পে বাংলা ২৭ কোটির বেশি শ্রমদিবস সৃষ্টি করেছে। জঙ্গলমহলের জেলা পুরুলিয়া এই
আর্থিক বছরেই সর্বকালের রেকর্ড ভেঙে ১ কোটি ১৭ লক্ষের বেশি শ্রমদিবস তৈরি করে এই প্রকল্পের মানচিত্রে প্রায় একলাফে পাঁচ নম্বরে উঠে এসেছে।
টানা ২৬ দিনের বিরতির পর সোমবার থেকে দেশজুড়ে একশ দিনের কাজ শুরু হওয়ার ঠিক আগেই এই খতিয়ানকে বড় সাফল্য বলেই মনে করছে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগ। বিভাগীয় মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “একদিকে করোনা ভীতি, তারপর লকডাউনের জন্য এই কাজে প্রভাব পড়েছিল। কিন্তু মার্চ শেষের আগেই কাজের গতি বেশি থাকায় আমরা পঞ্চাশ ছুঁয়ে ফেলেছি। গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার একটা বড় প্রকল্প একশ দিনের কাজ। এরপর সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং মেনে মুখে মাস্ক–কাপড় বেঁধে শ্রমিকরা এই কাজ করবেন।” তবে পুরুলিয়া-সহ জঙ্গলমহলের একাধিক জেলায় প্রায় সমগ্র মার্চ মাসই সামাজিক দূরত্ব মেনে এই কাজ হয়েছে। আর তার ভিত্তিতেই করোনার কোপেও একশ দিনের রাজ্যের গড় ৪৯.৮৮।
কাজের এই খতিয়ানে প্রথমে স্থানে উত্তরবঙ্গের কালিম্পং। এই জেলার কাজের গড় ৮৭.৪৭। দ্বিতীয় দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, এখানে কাজের গড় ৬৮.৬৮। তৃতীয় স্থান দার্জিলিং গোর্খা হিল কাউন্সিল, কাজের গড় ৬৩.৩৩। এই তালিকায় কাজের গড় ৫৭.৬৮ নিয়ে পঞ্চম স্থানে পুরুলিয়া থাকলেও, তার রেকর্ড অন্যত্র। সর্বকালের রেকর্ড ভেঙে এই জেলার শ্রম দিবস তৈরি করেছে ১ কোটি ১৭ লক্ষ ৪৮ হাজার ৯৫১। মোট ১৪টি জেলার কাজের গড় রয়েছে পঞ্চাশের ওপরে। সবচেয়ে কম পূর্ব বর্ধমান, ৩৭.৬৯ শতাংশ।
ছবি ও ভিডিও: অমিত সিং দেও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.