আকাশনীল ভট্টাচার্য, বারাকপুর: খড়দহে প্রৌঢ় খুনের ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কিনারা করল পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া রুমাল ও হোটেলের বিলের সূত্র ধরে পুলিশের জালে নিহত প্রৌঢ় প্রতুল চক্রবর্তীর প্রথম পক্ষের স্ত্রী অদিতি চক্রবর্তী। কাশীপুরের ফ্ল্যাট থেকে অদিতিকে প্রথম আটক করে পুলিশ। তারপর লাগাতার জেরায় অবশেষে খুনের কথা কবুল করে অদিতি। শুক্রবার তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার খড়দহের শান্তিনগর এলাকার খালপাড়ে একটি দোতলা বাড়িতে উদ্ধার হয় প্রতুল চক্রবর্তীর মৃতদেহ। বিছানার উপর গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় পড়েছিল তাঁর দেহ। গুরুগ্রামের বাসিন্দা তিনদিন আগেই বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন। প্রাথমিক তদন্তে আত্মহত্যা না খুন সে বিষয়ে ধন্দে ছিলেন পুলিশ আধিকারিকরা। কিন্তু ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া রুমাল ও একটি হোটেলের বিল থেকে তদন্ত অন্য মোড় নেয়। জানা যায়, প্রতুলবাবুর প্রথম পক্ষের স্ত্রী অদিতির কথা। দমদম এয়ারপোর্টে অফিসার পদে চাকুরিরত অদিতির সঙ্গে অনেকদিন আগেই বিচ্ছেদ হয়ে যায় প্রতুলবাবুর। কিন্তু বিচ্ছেদের পরেও প্রাক্তন স্ত্রীর কাছে টাকা দাবি করতেন ওই প্রৌঢ়। টাকা না পেলে মানসিক নির্যাতন করতেন অদিতিকে। প্রতুল আবার অদিতির দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী।
তদন্তকারী আধিকারিকরা জানিয়েছেন, প্রতুলবাবুর কোনও স্থায়ী ঠিকানা ছিল না। বাড়ি ভাড়ার টাকাও প্রাক্তন স্ত্রীর থেকে আদায় করতেন তিনি। একটি নামী ফার্মা কোম্পানিতে কর্মরত প্রতুলবাবু তিনদিন আগে শান্তিনগরের খালপাড়ে বাড়ি ভাড়া নেন। তারপর বুধবার রাতে অদিতিকে বাড়িতে ডাকেন তিনি। জানা গিয়েছে, যাবতীয় টাকা ফেরত দেওয়ার ফাঁদ পেতে প্রাক্তন স্ত্রীকে বাড়িতে ডাকেন তিনি। কিন্তু বাড়িতে আসার পর টাকা তো দেনই-নি। উলটে অদিতিকে বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে চরম সিদ্ধান্ত নেয় অদিতি। শাড়ির ফাঁস দিয়ে প্রাক্তন স্বামীকে শ্বাসরোধ করে খুন করে ওই মহিলা। কিন্তু ঘরের মধ্যে থেকে যায় তার একটি রুমাল ও নিউটাউনের একটি হোটেলের বিল।
এই রুমাল ও হোটেলের বিলের সূত্র ধরেই অদিতির কথা জানতে পারে পুলিশ। তারপর কাশীপুরে তার ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে তাকে আটক করা হয়। থানায় জেরার মুখে ভেঙে পড়ে অপরাধ কবুল করে অদিতি। ধৃতকে এদিন আদালতে পেশ করা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.