ধীমান রায়, কাটোয়া: পেট চালাতে বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন মমত কারগি ট্রেনে ঘুরে গান গাইতে শুরু করেছিলেন। সেই গানই এই করোনা (Corona Virus) আবহে গুসকরার কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে বন্দি পঞ্চাশ জনকে দিচ্ছে মুক্তির স্বাদ। ঘর ছেড়ে, প্রিয়জনদের ছেড়ে এরাজ্যে আটকে যখন দমবন্ধ অবস্থা ভিনরাজ্যের শ্রমিকদের, তখন তাঁদের এক মুঠো তাজা বাতাস দিচ্ছে মমতের গান।
লকডাউন জারি হওয়ার পর ভিনরাজ্যের অনেক শ্রমিকই পায়ে হেঁটে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেছিলেন। কেউ কেউ পৌঁছতে পারলেও এরাজ্যে আটকে পড়েন বহু মানুষ। তাঁদের ঠাঁই হয়েছে বিভিন্ন কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে। গুসকরা বালিকা বিদ্যালয়ের কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন তেমনই প্রায় ৫০ জন। তাঁদেরই একজন মমত কারকি। যিনি ট্রেনে ঘুরে ঘুরে গান গেয়ে উপার্জন করতেন। হাওড়ায় থাকাকালীন দেশজুড়ে লকডাউন জারি হয়। এরপর পায়ে হেঁটে বাড়ি ফেরার সময় গুসকরায় তাঁকে আটকে দেয় পুলিশ। সেই থেকেই ঠিকানা ওই গুসকরার কোয়ারেন্টাইন সেন্টার। সেখানেই গানে বাকিদের মাতিয়ে রেখেছেন মমত। তাঁর কথায়, “কবে লকডাউন উঠবে, কবে বাড়ি ফিরে পারব তা জানি না। তবে এইটুকু জানি যে অবস্থাতেই থাকি না কেন যন্ত্রণা ভুলে থাকার চেষ্টা করে যেতেই হবে। এই লড়াইয়ের নাম জীবন।”
জানা গিয়েছে, বাড়িতে বাবা-মা, স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে মমতের। বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন মমত জানান, একসময় সুস্থই ছিলেন তিনি। ছোটবেলায় সাপের কামড়ের জেরে কুনুইয়ের উপর থেকে ডান হাতটি খয়াতে হয় তাঁকে। তারপর থেকে ট্রেনে গান করাই পেশা। বাংলা, হিন্দি ও নেপালি এই তিন ভাষাতেই গান করতে পারেন মমত। কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের মমতের মতো সঙ্গী পেয়ে খুশি সকলে। এমন পরিস্থিতিতেও মন ভাল করা এমন সহযোদ্ধা আর কজনই বা পায়!
ছবি: জয়ন্ত দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.