ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিজাব পড়ায় ক্যাম্পাসের মধ্যেই এক ছাত্রীকে হেনস্তা করার অভিযোগে উত্তেজনা ছড়াল। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। অভিযুক্তরা তাঁকে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি তাড়া করে বলেও অভিযোগ। বাধ্য ২৩ বছরের ওই যুবতী ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে নিজেকে রক্ষা করেন।
এপ্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ফাইনাল ইয়ারের ওই ছাত্রী বলেন, “শনিবার রাত ১০টা নাগাদ আমি ও আমার এক বন্ধু ক্যান্টিন থেকে রাতের খাবার খেয়ে ফিরছিলাম। আচমকা রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা ১০-১২ জনের একটি দল আমাদের দেখে ‘জয় শ্রীরাম‘ বলে স্লোগান দিতে থাকে। আঙুল তুলে আমাদের দিকে দেখিয়ে বিভিন্ন মন্তব্যও করছিল। কিছুক্ষণ পরে আমাদের দিকে তাড়া করে আসছে দেখে ভয়ে পালিয়ে যাই।” অভিযুক্তদের ওই ঘটনার আগে কোনওদিন কলেজ ক্যাম্পাসে তিনি দেখেননি বলেও দাবি করেছেন।
তাঁর আরও অভিযোগ, এই বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করতে গেলেও স্থানীয় থানার পুলিশকর্মীরা প্রথমে নিতে চাননি। পরে নিলেও এফআইআর থেকে হুমকি শব্দটি বাদ দেওয়ার কথা বলে। যদিও পরেরদিন ফের অভিযোগপত্রে যুক্ত করা হয় ওই শব্দটিকে।
ওই যুবতীর কথায়, “আমি একজন হিজাব ব্যবহারকারী মুসলিম। সবসময় এই ধরনের পোশাক ব্যবহার করি। কিন্তু, আজ পর্যন্ত কোনওদিন এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কোনওদিন এইভাবে হেনস্তাও করা হয়নি আমাকে। শনিবার যখন এই ঘটনা ঘটে তখন ওই এলাকায় আমাদের বাঁচানোর জন্য কেউ ছিল না। এভাবে কী করে এখানে বসবাস করব আমরা।”
দুদিন আগে সংসদের সেন্ট্রাল হলে এনডিএ-র সংসদীয় দলনেতা হিসেবে নির্বাচিত করা হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। এরপরই বক্তব্য রাখতে উঠে ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ’-এর সঙ্গে ‘সব কা বিশ্বাস’ অর্জনের স্লোগান দেন তিনি। বলেন, “দেশে বসবাসকারী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিশ্বাস অর্জন করতে হবে আমাদের। রাগ ও বিদ্বেষ ভুলে সবাই মিলে একসঙ্গে চেষ্টা না করলে দেশের উন্নতি কখনই সম্ভব নয়। তাই জাতপাত ও ধর্মের নামে নিজেদের মধ্যে বিভেদ করলে চলবে না। এটা একটা চ্যালেঞ্জ, একে আমাদের অতিক্রম করতেই হবে।”
ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদে দ্বিতীয়বার শপথ নেওয়ার আগে নরেন্দ্র মোদি সবার বিশ্বাস অর্জনের জোর দিয়েছেন। কিন্তু, তারপরও সেই কথা শুনছে না কিছু অতি উৎসাহী মানুষ। তাই দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের উপর হিংসার ঘটনা ফের বাড়ছে। সম্প্রতি বিহারের বেগুসরাই এলাকায় এক বিক্রেতাকে নাম জিজ্ঞাসা করে এক মদ্যপ। পরে ওই ব্যক্তি মুসলিম সম্প্রদায়ের শুনে তাঁকে গুলি করে। অন্যদিকে, গুরুগ্রামে ২৫ বছরের এক মুসলিম যুবককে মাথার টুপি খুলে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে বাধ্য করানোর অভিযোগ ওঠে একদল মানুষের বিরুদ্ধে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.