দেবব্রত মণ্ডল, ক্যানিং: সেই জমিদারি নেই। প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায়ের প্রথাও অনেক আগে উঠে গিয়েছে। তবু স্থানীয় দুই সম্প্রদায়ের মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণে আজও স্বমহিমায় দেবী পূজিতা হন ভাঙড়ের (Bhangar) মজুমদার পরিবারে।
ভাঙড়ের (Bhangar) স্বস্ত্যয়নগাছি গ্রামে রয়েছে শতাব্দী প্রাচীন মজুমদার বাড়ি। এক সময় আত্মীয়-স্বজন এবং লোকজনে গমগম করত মজুমদারদের এই বিশাল জমিদার বাড়ি। পুর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণ মিলে তিন মহলার দ্বিতল বাড়ি ছিল মজুমদারদের। এখন অবশ্য তার ভগ্নদশা। একটি মহলার অস্তত্বই বিলোপ হয়েছে। তবে দুটি মহলার দ্বিতল বাড়ি এখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। যদিও সংস্কারের অভাবে তা ভগ্ন প্রায়। তবু নিয়ম মেনে প্রতি বছরই ভাঙড়ের মজুমদার বাড়িতে দুর্গাপূজা হয়। বাড়ির লোকেরা থাকেন না ঠিকই তবে গোবিন্দের নিত্যপুজো এবং দূর্গা পুজোর জন্য একজন পুরোহিত রাখা রয়েছে। একজন কেয়ারটেকারও রয়েছে।
এখন আর আগের মতো চাকচিক্য দেখা যায় না। বন্ধ হয়ে গিয়েছে নাটমন্দিরে দূর্গা প্রতিমা গড়ার কাজ। বন্ধ পশুবলি প্রথাও। তবু শারদ উৎসবের কটা দিন মজুমদার বাড়িতে হিন্দু ও মুসলমানের মেল বন্ধন ঘটে, যা পুজোয় অন্য মাত্রা এনে দেয়। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা ভাঙড়। সেখানে হিন্দুদের তুলনায় মুসলিমদের সংখ্যা বেশি। ভাঙড়ের এই পুজোয় আনন্দে মেতে ওঠেন দুই সম্প্রদায়ের গ্রামবাসীই। হিন্দুদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পুজোর বিভিন্ন আয়োজনে অংশ নেন তাঁরা। অষ্টমীর দিনে সবাই মিলে একসঙ্গে বসে হয় খাওয়াদাওয়া।
মজুমদার বাড়ির তরফে তাপস মজুমদার জানান, এবারেও স্বস্ত্যয়নগাছি মজুমদার বাড়ির দুর্গাপ্রতিমা গড়ছেন শিখরপুরের মৃৎশিল্পী ইন্দ্রজিৎ বিশ্বাস। জন্মাষ্টমীতে কাঠামো পুজোর পর শুরু হয়েছে মূর্তি গড়ার কাজ। আগের মতো এই পুজো জাঁকজমক না থাকলেও এখানে দুই সম্প্রদায়ের মানুষের অংশগ্রহণ মুগ্ধ করে। এটাই এই পুজোর বৈশিষ্ট্য। গ্রামের হিন্দুরা যেমন এই পুজোয় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। তেমনই মুসলিমরাও বিভিন্ন কাজে হাত লাগান। এমনকি নাট মন্দিরের সংস্কারের কাজও করেছেন এক মুসলিম যুবক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.