ধীমান রায়, কাটোয়া: ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর খবরের জের৷ আউশগ্রামে অজয় নদের চরে গজিয়ে ওঠা চোলাই মদের কারখানায় অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি ঠেক ভাঙল পুলিশ ও আবগারি দপ্তর৷ অজয় নদের চরে চোলাই কারবারের খবর ‘সংবাদ প্রতিদিন ডট ইন’-এ প্রকাশিত হয়৷ ওই খবর প্রকাশিত হতেই রবিবার আউশগ্রামে যান খোদ জেলার পুলিশ সুপার৷ যান আবগারি দপ্তরের আধিকারিকরাও। আউশগ্রাম থানায় বসে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন তাঁরা৷ এরপর কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখেন। আউশগ্রাম ও ভাতার এলাকা মিলে শনিবার রাত থেকে রবিবার ভোর পর্যন্ত পুলিশ ১৩ জনকে চোলাই ভাঁটি চালানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করে৷ পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চোলাই মদের বিরুদ্ধে জেলাজুড়েই আমরা অভিযান চালাচ্ছি। এই অভিযান লাগাতার চলবে। কোথাও বেআইনি চোলাই ঠেক চলতে দেওয়া হবে না।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার থেকে জেলা জুড়ে নদীর চরগুলি ও নদী সংলগ্ন নির্জন জায়গাগুলি পুলিশের নজরে রাখা হবে। যাতে ওই এলাকাগুলিতে কেউ লুকিয়ে চুড়িয়ে চোলাই তৈরি করতে না পারে।
সম্প্রতি দু’তিন মাস ধরেই পুলিশ জেলাজুড়ে রুটিনমাফিক চোলাই মদের ঠেকগুলির বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে৷ নদিয়ার শান্তিপুরে বিষমদে মৃত্যুর ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশ ও আবগারি দপ্তর চোলাই কারবারিদের বিরুদ্ধে আরও তৎপর হয়। এই তৎপরতা উপেক্ষা করে আউশগ্রামের অজয় নদের চরে গজিয়ে উঠেছিল একাধিক চোলাই তৈরির ভাঁটি। কিন্তু তা ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেনি পুলিশ ও আবগারি বিভাগ৷ আউশগ্রামে অজয় নদের চরে গোপনে চোলাই তৈরির কারখানার খবর ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এ ছবি-সহ প্রকাশ করা হয়। জানা গিয়েছে, খবর প্রকাশিত হওয়ার পরই নড়েচড়ে বসে পুলিশ ও আবগারি বিভাগ
[আবগারি দপ্তরের খামতির সুযোগে শিল্পাঞ্চলে জমজমাট বেআইনি মদের কারবার]
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার গভীর রাতে আউশগ্রাম থানার বিশাল পুলিশবাহিনী বিলষন্ডা গ্রামের কাছে অজয় নদের চরে পৌঁছায়। সেখানে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায়, শয়ে শয়ে টিনের বাক্স। যা দিয়ে চোলাই তৈরি হয়৷ সারি দিয়ে রয়েছে উনুন৷ পুলিশ উনুনগুলি ভেঙে দেয়। চোলাই তৈরির জন্য রাখা গুড় ও ইস্ট মেশানো তরল নদীর জলে ফেলে নষ্ট করে দেওয়া হয়৷ ভাঁটিগুলি থেকে প্রায় ৬৫০টি গুড়ের টিন পুলিশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিকে পুলিশের পাশাপাশি শনিবার রাতে আবগারি বিভাগ আউশগ্রামের দিগনগর, গোপীনাথপুর, ভাতারের বড়বেলুন, বসতপুর প্রভৃতি গ্রামে অভিযান শুরু করে। আবগারি বিভাগের গুসকরা সার্কেলের ওসি অলোক মুদি জানিয়েছেন, ভাতার ও আউশগ্রাম এলাকা মিলে শনিবার রাতে তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে ১২০০ লিটার জাব (গুড় ও ইস্ট মিশ্রণ), ৬টি বড় হাঁড়ি ও প্রায় ২০০ লিটার চোলাই মদ৷
ছবি: জয়ন্ত দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.