Advertisement
Advertisement
Madhyamik Exam

আগুনে পুড়ে ছাই বাড়ি, পরীক্ষার শুরুর দিন মৃত্যু বাবার, মনের জোরেই মাধ্যমিক পাশ রেনুইয়ার

উচ্চশিক্ষায় প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আর্থিক সংকট।

House burnt in fire, father dies on day of exam, Girl passed Madhyamik Exam
Published by: Subhankar Patra
  • Posted:May 2, 2025 7:35 pm
  • Updated:May 2, 2025 7:35 pm  

মণিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: পরীক্ষার বাকি ছিল মাত্র সাতদিন। বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় বাড়ি। ভষ্মীভূত হয়ে গিয়েছিল বই, খাতা। জ্বলে যায় অ্যাডমিট কার্ডও। পরীক্ষা শুরু দিন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। ওই দিনই মারা যান অগ্নিকাণ্ডে আহত বাবা। তবুও মনে পাথর রেখে পরীক্ষায় বসেছিল সে। আজ মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশ হতেই চোখে জল মা’র। পাস করেছেন সদ্য বাবাকে হারানো মেয়ে।

উলুবেড়িয়ার হাল্লান হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল রেনুইয়া খাতুন। শুক্রবার মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হয়েছে। তাতে দেখা যায় রেনুইয়া পাস করেছে। হাতের মধ্যে তার প্রাপ্ত নম্বর ২৩১। ৩৩ শতাংশ নম্বর পেয়ে সে পাস করেছে। রেনুইয়ার ইচ্ছা আগামী দিনে সে আরো পড়াশোনা করবে। যদিও পরিবারের তার বাধ সাধছে অভাব। তাই ইচ্ছা থাকলেও কিভাবে পড়াশোনা করবে তা নিয়ে রীতিমতো চিন্তিতও তারা। যদিও রেনুইয়ার মা রেহানা খাতুন জানান পাড়া-প্রতিবেশী গ্রামের মানুষ তাদের পাশে রয়েছেন। তাদেরকেই সম্বল করে তারা এগিয়ে যাবে। মেয়েকে পড়াশোনাও করাবে। তবে তারা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ যে ঘটনার  পরে প্রশাসন থেকে কিছুটা সহায়তা করেছিল ঠিকই। কিন্তু তারপর থেকে তাদের আর কোনও খোঁজ খবর রাখেনি প্রশাসন।

Advertisement

গত ৪ ফেব্রুয়ারি ফেব্রুয়ারি শর্ট সার্কিটের কারনে রেনুইয়াদের বাড়িতে আগুন লেগে যায়। সেখান থেকে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে গোটা বাড়ি ভষ্মীভূত হয়ে যায়। বাবা রিয়াজুল আলম-সহ তিনজন আহত হন। বাবা এবং কাকাকে উলুবেড়িয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর তাদের স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতায়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় রেনুইয়ার বাবা রিয়াজুল আলম মারা যান। সেদিন থেকেই শুরু হয় রেনুইয়ার মাধ্যমিক পরীক্ষা। বুকভাঙা কান্না চেপে রেখে পরীক্ষা দিতে যায় সে। এই অবস্থাতেও সে দ্বিতীয় পরীক্ষা ইংরেজি-সহ অন্যান্য পরীক্ষা দেয়। আজ তাঁর ফলাফল। এই সাফল্যে সে নিজে এবং পরিবারের সকলের রীতিমতো খুশি। খুশি পাড়া প্রতিবেশীরাও।

এখন উচ্চশিক্ষায় প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আর্থিক সংকট। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে মানুষটি মারা যাওয়ার পর সংসার কীভাবে চলবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সে পড়াশোনা যেন বিলাসিতা মাত্র! তবে রেনুইয়ার মা রেহানা খাতুন বলছেন, “পাড়া প্রতিবেশীরাই আমাদের ভরসা। তাঁদের সাহায্য নিয়ে সংসার চলছে। তেমনি তাদের সাহায্য নিয়েই মেয়েকে আগামীদিনে পড়াশোনা করাব।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement