অর্ণব দাস, বারাকপুর: এলাকায় থাকতে গেলে বিজেপি (BJP) করা যাবে না। এমনই ‘ফতোয়া’ ছিল উত্তর ২৪ পরগনার রহড়া থানা এলাকার রুইয়ায়। কিন্তু তা মানেনি বিশ্বাস পরিবার। বাড়ির সকলেই বিজেপির সমর্থক। সম্ভবত তারই মাশুল দিতে হয়েছিল গত মাসে। গৃহবধূ রূপা বিশ্বাসের অভিযোগ, সেবার বাড়িতে ঢুকে তাঁর শ্লীলতাহানির শিকার করা হয়। মারধর করা হয় তাঁর স্বামীকে। হাত ভেঙে যায় তাঁর। কুকীর্তির সঙ্গে জড়িত সকলে তৃণমূল (TMC) বলে অভিযোগ নিগৃহীতার। রহড়া থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ করা হলে তা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেন এলাকারই কয়েকজন প্রভাবশালী। তাতে রাজি না হওয়ায় বিপদ আরও বাড়ে। চাপে পড়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয় পরিবারটি। পুলিশ সদর্থক ব্যবস্থা নিক, এই প্রত্যাশায় দিন কাটছে অসহায় পরিবারের। এলাকায় ঢুকতেই পারছেন না তাঁরা।
হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও বিজেপিকে সমর্থনের পথ থেকে সরে আসেননি রুইয়ার বাসিন্দার রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস, রূপা বিশ্বাসরা। তারই মাশুল গুনতে হল। রূপার অভিযোগ, গত শনিবার শ্রীদাম বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি ঘরে ঢুকে শ্লীলতাহানি (Molestation) করে। পাশাপাশি তাঁর স্বামী রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাসকেও মারধর করা হয়। তাঁর হাত ভেঙে যায়। তাঁরা রহড়া থানায় গিয়ে চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। শ্রীদাম বিশ্বাস, রিনা বিশ্বাস, বিশ্বজিৎ বিশ্বাস ও মিতা বিশ্বাস।
রূপার আরও অভিযোগ, থানায় দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের জন্য তাঁদের চাপ দেয় অভিযুক্ত ওই চারজন। তিনি তাতে সম্মত হননি। ফলে জোটে আরও ‘শাস্তি’। গত বৃহস্পতিবার রূপাদেবীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁর মাথা ফেটে যায়। জখম হয় হাত। তারপর থেকেই বাড়িছাড়া রূপা বিশ্বাসের পরিবার। যত্রতত্র ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাঁরা, বাড়িতে ঢুকতে পারছেন না। রহড়া থানায় নতুন করে অভিযোগ দায়ের করলেও এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
রহড়া থানার তরফে রূপাদেবীকে শ্লীলতাহানি সংক্রান্ত জবানবন্দি দেওয়ার জন্য বারাকপুর আদালতে নিয়ে যায়। সেখানে রূপাদেবী দাবি করেন, তাঁরা বিজেপি করেন বলে তাঁদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে তৃণমূল কর্মীরা। এই ঘটনায় বন্দিপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কিশোর বৈশ্য বলেন, ”আমাদের কেউ এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়। এটা বিজেপির দুই পরিবারের লড়াই। এখানে তৃণমূলের কোনও হাত নেই। তৃণমূলকে কালিমা লিপ্ত করার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বদনাম করা হচ্ছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.