সুব্রত বিশ্বাস: অসহ্য গরমে রেললাইনে কর্মরত কর্মীদের কোনওরকম সুরক্ষা সামগ্রী দিচ্ছে না রেল। বিশেষ করে হাওড়া ডিভিশনে বিগত দশ বছরের বেশি সময় ধরে সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়াই লাইনে কাজ করছেন ট্রাকম্যানরা। পূর্ব রেলের কর্মী সংগঠন মেনস ইউনিয়ন এই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ অভিযোগ করেন, যাত্রীদের সুরক্ষার দায়িত্ব যাদের ঘাড়ে সবচেয়ে বেশি, তারাই আজ সবচেয়ে বেশি অরক্ষিত। প্রচণ্ড গরমে লাইনে কাজ করলেও তাদের নেই সেফটি স্যু, হেলমেট, সমার রেনকোট, উইন্টার জ্যাকেট। এসব সামগ্রী ছাড়াই কাজ করছেন কর্মীরা। দশ বছরের উপর এই অব্যবস্থায় বিন্দুমাত্র টনক নড়েনি হাওড়া ডিভিশনের। প্রিন্সিপ্যাল চিফ ইঞ্জিনিয়ার কর্মীদের দাবি মতো সামগ্রী দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও ডিভিশন ফান্ড না থাকার দোহাই দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যায় বলে কর্মীদের অভিযোগ।
হাওড়ার ডিআরএম সঞ্জীব কুমার জানান, ‘‘আমার কাছে এই দাবি আসেনি কারও তরফে। দাবি এলে খতিয়ে দেখা হবে।’’ পূর্ব রেলে পঞ্চাশ হাজার ট্রাকম্যান রয়েছে। হাওড়া ডিভিশনে সংখ্যাটা আট হাজারের বেশি। এই কর্মীদের আগে গরমে ওআরএস দেওয়া হতো। যা এখন হয় না বলে অভিযোগ। এইসব কর্মীদের দিয়ে ১৮ থেকে ২০ কিলোমিটার নাইট পেট্রোলিং, সমার পেট্রোলিং করানো হয়। বিগত দিনে আপ ও ডাউনে দুটো লাইন থাকলেও এখন পাশাপাশি চারটে লাইন হয়েছে। তা সত্ত্বেও আগের সেই লাইন পরীক্ষার জন্য বরাদ্দ দূরত্ব কমানো হয়নি। পাশাপাশি কাজের চাপ বাড়ানো হয়েছে। বহু শূন্য পদ পূরণ হয়নি, ২০ শতাংশ ট্রাকম্যানকে অন্য কাজে লাগানোর জন্য কর্মীর সংখ্যা এখন অনেক কম। ফলে ক্রমাগত বাড়ছে কাজের চাপ।
পাশাপাশি বরাদ্দ ভাতাও মিলছে না সময়ে বলে কর্মী সংগঠনের অভিযোগ। অমিতবাবুর অভিযোগ, হাওড়া ডিভিশন পুজোর পর থেকে ভাতা বন্ধ রেখেছে ফলে কর্মীরা আর্থিক সুবিধাটুকুও পাচ্ছেন না বলে তাঁরা জানান। পাশাপাশি কাজের সময়ও কোথাও সাড়ে নয় ঘণ্টা, তো কোথাও এগারো ঘণ্টা। খাবার সময়টুকু নেই বলে ক্ষোভ রয়েছে তাঁদের। এমনকী সামান্য বিশ্রামের ব্যবস্থাও নেই। কারণ এই কর্মীদের উপর নজর রাখতে রেল তাঁদের বুকে লাগিয়ে দিয়েছে জিপিএস। নজরদারি এড়ানোর কোনও উপায় নেই। অথচ এঁরা অরক্ষিত বলে কর্মী সংগঠনের অভিযোগ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.