সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ডহারবার: মদ খেয়ে বাড়ি ফিরেছিল বাবা। চরমে পৌঁছেছিল বাবার মাতলামো। তার জেরে পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছিল এবারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর। বারবার বাবাকে চুপ করতে বলা সত্ত্বেও কাজ হয়নি। বাবা,মেয়ের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একসময় বাবা ও মেয়ের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি শুরু হয়। আর তখনই ঘরেতে রাখা বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ওই কিশোরী। এরপর বিষ খান ওই কিশোরীর বাবাও। দু’জনেই এখন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।
রবিবার রাতে মদ খেয়ে বাড়ি ফেরেন পাথরপ্রতিমার রামগঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের দেবীরচক গ্রামের বাসিন্দা পেশায় কৃষিজীবী অমল দাস (৪২)। মত্ত অবস্থায় তিনি বাড়ির মধ্যে চিৎকার,চেঁচামেচি শুরু করে দেন। সেই সময় ঘরে বসে পড়ছিল এবারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী প্রভাতী দাস (১৭)। তার পড়ার ক্ষতি হচ্ছে জানিয়ে বাবাকে চুপ করতে বলে। কিন্তু বাবা একইভাবে চিৎকার করতে থাকায় ওই কিশোরী আরও কয়েকবার তাঁকে চেঁচামেচি করতে বারণ করে। কিন্তু কে শোনে কার কথা? এরপর বাবা ও মেয়ের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি ও পরে ঝগড়াঝাঁটি শুরু হয়। বাবাকে চুপ করাতে না পেরে প্রভাতী শেষ পর্যন্ত ধানগাছের পোকা মারার জন্য বাড়িতে রাখা বিষের শিশি হাতে তুলে নিয়ে তা মুখে ঢেলে দেয়। এদিকে মেয়েকে বিষ খেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়তে দেখে বাবাও সেই বিষ খেয়ে ফেলেন। স্থানীয় বাসিন্দারা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক অবস্থায় দু’জনকে গদামথুরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসেন।
সোমবার ভোরে দু’জনের শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হওয়ায় দু’জনকেই ডায়মন্ডহারবার জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বাবা ও মেয়ে দু’জনের অবস্থাই সংকটজনক। তবে ওই কিশোরীর শারীরিক অবস্থার ক্রমেই অবনতি হওয়ায় তাকে সবসময় চিকিৎসক ও নার্সরা পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আরও ১২ ঘন্টা পর্যবেক্ষণের পর তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হবে। এদিকে এই ঘটনায় রীতিমত হতচকিত ওই ছাত্রীর পরিবার ও প্রতিবেশীরা। দ্রুত বাড়ির মেয়ের আরোগ্য কামনা করছেন সকলে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.