উচ্চ মাধ্যমিকে নবম স্থানে পবিত্র।
দেবব্রত মণ্ডল ও সুরজিৎ দেব: উচ্চ মাধ্যমিকের (HS Result 2025) মেধা তালিকায় যমজ দুই ভাইয়ের কৃতিত্বে খুশি নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র অনীক বাড়ুই ও অনীশ বাড়ুই। মেধা তালিকায় সম্ভাব্য নবম স্থানে রয়েছে দুই ভাই। তাদের দুজনের প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৯। বাঁকুড়ার বাসিন্দা দুই ভাই পড়াশোনার সূত্রে নরেন্দ্রপুরে থাকে। ২০২৩ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষাতেও চতুর্থ ও ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছিল তারা।
উচ্চ মাধ্যমিক (WBCHSE HS Result 2025) পরীক্ষায় মেধা তালিকায় নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের নাম থাকায় উচ্ছ্বসিত শিক্ষক শিক্ষিকা থেকে স্বামীজিরা। এ বিষয়ে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ ইস্টেশনন্দ জি মহারাজ জানান, উচ্চ মাধ্যমিকে মেধা তালিকায় নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের চার জন ছাত্রের নাম রয়েছে। উল্লেখিতভাবে এই চারজন ছাত্রই ২০২৩ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষাতেও মেধা তালিকায় ছিল। সমস্ত মেধাবী ছাত্রদের এই সাফল্যে খুশি।
অন্যদিকে, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে নবম স্থান অধিকার করেছে পবিত্র মণ্ডল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের সুন্দরবন আদর্শ বিদ্যামন্দিরের ছাত্র সে। ওই স্কুল থেকেই এবার মাধ্যমিকে দশম স্থান অধিকার করেছে শৌভিক দিন্দা। দরিদ্র পরিবারের সন্তান পবিত্র এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৪৮৯ নম্বর পেয়েছে। পাথরপ্রতিমার এল-প্লটের প্রত্যন্ত গ্রাম উপেন্দ্রনগরের বাসিন্দা পবিত্র অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান। বাবা নিবারণ মণ্ডল অন্যের পানবরজে শ্রমিকের কাজ করে সংসার সামলান। মা বর্ণালী দেবী গৃহবধূ। পবিত্র জানায়, আগামীতে আদর্শ চিকিৎসক হতে চায় সে। তার কথায়, “সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় বাস করি। এখানকার মানুষের একমাত্র ভরসা গ্রামের কোয়াক ডাক্তারের উপরই। অন্যথায় খেয়া পার হয়ে অনেক কষ্টেসৃষ্টে মানুষজনকে পাথরপ্রতিমা কিংবা কাকদ্বীপের হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবার জন্য নিতে যেতে হয়। মুমূর্ষু রোগীকে নিয়ে দূর-দূরান্তের পথ পেরিয়ে সরকারি হাসপাতালে পৌঁছতে রোগীর পরিজনদের বহু ভোগান্তির শিকার হতে হয়। অনেক রোগীর মৃত্যু পর্যন্তও হয়। তাই স্বপ্ন দেখি, ভবিষ্যতে চিকিৎসক হয়েই গ্রামের মানুষের চিকিৎসা করার।”
পবিত্রর প্রিয় খেলা ক্রিকেট। রোহিত শর্মা প্রিয় ক্রিকেটার। অবসর সময়ে অরিজিৎ সিংয়ের গান শুনতেই বেশি ভালবাসে পবিত্র। ছেলের সাফল্যে আনন্দে চোখে জল বাবা-মায়ের। হাজার কষ্ট সয়েও ছেলেকে চিকিৎসক করার স্বপ্নে এখন বিভোর তাঁরা। পবিত্রর রেজাল্টে গর্বিত তার স্কুলের শিক্ষকরাও। সহকারি প্রধান শিক্ষক শঙ্কর বিশ্বাস বলেন, “আমরা গর্বিত। একই বছরে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে স্কুলের এমন জোড়া সাফল্যে দারুণ খুশি সকলে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.