নিজস্ব চিত্র
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বীরভূমের নলহাটিতে উদ্ধার বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরক। সেই বিস্ফোরকে এক সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটলে ভয়ংকর পরিস্থিতি হতে পারত। জেলার তিনটি শহর সিউড়ি, রামপুরহাট, বোলপুর কার্যত উড়ে যেত বলে অনুমান পুলিশ আধিকারিদের।
কেন এত বিস্ফোরক মজুত রাখা হয়েছিল? কোথায় তা পাচার করা হত? পুলিশের নজর এড়িয়ে কী করে বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরণ মজুত করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, বুধবার বিকেলে ঝাড়খণ্ড সীমান্ত পাসিনালা এলাকায় অভিযান চালায় বীরভূম জেলা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট শাখা। দু’টি গোডাউনে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা হয় প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক। যা দেখে চক্ষুছানা বড়া হয়ে যায় আধিকারিকদেরও। জানা গিয়েছে, নলহাটি থানা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে ম্যাডোনা প্রাথমিক স্কুলের ঠিক বিপরীত দিকের দু’টি গোডাউন থেকে বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে।
প্রথম গোডাউনের দেওয়াল ভেঙে উদ্ধার হয়েছে, জিলেটিন, ডিটোনেটর, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৬ প্যাকেট জিলেটিন ছিল। প্রত্যেক প্যাকেটে ২০০টি করে এই বিস্ফোরক পাওয়া গিয়েছে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে তিনটে ডিটোনেটর প্যাকেট। প্রত্যেক প্যাকেটে দেড় হাজার ডিটোনেটর পাওয়া গিয়েছে। অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ৩১ প্যাকেট। প্রতি প্যাকেট ৫০কেজি ওজনের। ২০০ মিটার দূরে দ্বিতীয় গোডাউন থেকে জিলোটিন ১০ প্যাকেট, ডিটোনেটর ১ প্যাকেট, ২৭ প্যাকেট অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট উদ্ধার হয়েছে। অনুমান, বীরভূম, ঝাড়খণ্ড ও মুর্শিদাবাদে এই বিস্ফোরক পাচার করা হত।
অভিযোগ, এই ঘটনার সঙ্গে নলহাটি থানার বাসিন্দা শাহে আলম ওরফে বিকি নামের এক ব্যক্তির যোগ রয়েছে। এই বিকির বিরুদ্ধে আগেও বিস্ফোরক মজুত রাখার অভিযোগ রয়েছে। গত জানুয়ারি মাসের রামপুরহাট থানা এলাকা থেকে প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছিল। তাঁকে গ্রেপ্তারও করা হয়।
এনফোর্সমেন্ট বিভাগের ডিএসপি স্বপন চক্রবর্তী জানান, “দু’টি গোডাউন থেকে বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরক উদ্ধার করেছি। বেশ দূরত্বে গোডাউন দুটি ছিল। সেগুলি সিল করে রাখা হয়েছিল। কে এই গোডাউন পরিচালনা করত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, “আমরা অভিযান চালিয়ে প্রচুর বিস্ফোরক উদ্ধার করেছি।” বিস্ফোরক উদ্ধারের পর বিজেপির তরফে এনআইএ তদন্তের দাবি তোলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.