ছবি: প্রতীকী।
বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: রথের মেলা দেখানোর নাম করে বাড়ি থেকে ডাকিয়ে এনে স্ত্রীর গলার নলি কেটে খুনের চেষ্টা চালানোর অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। যদিও অভিযোগ, ওই ঘটনার পর অপরিচিত একজন তাঁর স্ত্রীকে ধরে নিয়ে গিয়ে খুন করার চেষ্টা করেছে বলে গল্প ফেঁদেছিলেন স্বামী। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। পুলিশের কাছে স্বামীর কীর্তির কথা জানিয়ে দেন স্ত্রী। এরপর স্ত্রীকে খুনের চেষ্টার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার রাতে নদিয়ার কোতয়ালি থানার গোদাডাঙা এলাকায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গুরুতর জখম স্ত্রীর নাম সুস্মিতা শর্মা সাহা। তিনি বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কৃষ্ণনগর শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন। ধৃত স্বামীর নাম অভিজিৎ সাহা।
কোতোয়ালি থানার চাঁদমারি এলাকার বাসিন্দা দিলীপ শর্মার মেয়ে সুস্মিতা শর্মাকে বেশ কয়েক বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে করেন কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা অভিজিৎ সাহা। যদিও বিয়ের পর থেকে পেশায় বাসের ক্লিনার অভিজিৎ চাঁদমারির শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ইদানিং অভিজিৎ এবং সুস্মিতার মধ্যে দাম্পত্য জীবনের কয়েকটি বিষয় নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল। তা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ লেগেই ছিল। সুস্মিতার বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, শুক্রবার রাতে রথ দেখানোর নাম করে স্ত্রী সুস্মিতাকে কোতয়ালির গোদাডাঙ্গা এলাকায় ডেকে নিয়ে আসেন বিশ্বজিৎ। স্বামীর ডাকে সাড়া দিয়ে সুস্মিতা বাপের বাড়ি চাঁদমারি থেকে টোটোয় চড়ে গোদাডাঙ্গায় পৌঁছন রাত আটটা নাগাদ। সুস্মিতা সেখানে পৌঁছানোর অনেক আগে থেকেই সাইকেল নিয়ে অপেক্ষায় ছিল অভিজিৎ।
পুলিশকে প্রথমে অভিজিৎ জানিয়েছিলেন, “রথের মেলা দেখাতে রথতলায় যাওয়ার জন্য গোদাডাঙ্গা হয়ে যেতে শর্টকাট হয়। তাই স্ত্রীকে সাইকেলে চাপিয়ে আমি রথতলার দিকে নিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ আমার সাইকেলের সামনে দাঁড়ায় এসে দাঁড়ায় একজন অপরিচিত লোক। ওই লোকটি আমার স্ত্রীকে জোর করে টেনে নিয়ে যায় একটি আমবাগানে। সেখানেই আমার স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলার নলি কেটে খুনের চেষ্টা করে। আমি তখন কী করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। ওই সময় আমি আমার শ্বশুরকে দেখতে পেয়ে ডাকি।”
[ আরও পড়ুন: বাঘের পেটে গিয়েছেন মা, কুশপুতুল দাহ করে চলল শ্রাদ্ধানুষ্ঠান ]
স্থানীয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে খবর পেয়ে সুস্মিতাদেবীর বাবা দিলীপ শর্মা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। পরে মেয়ে সুস্মিতাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন ওই গৃহবধূ। দিলীপ শর্মা জানিয়েছেন, “জামাই আমার মেয়েকে রথ দেখানোর নাম করে বাড়ি থেকে ডাকিয়েছিল। এরপর আমি মেয়ের ওই অবস্থার খবর পেয়ে ছুটে যাই। আমবাগানের ভিতর থেকে মেয়ে আমাকে চিৎকার করে ডাকে। আমি এরপর তড়িঘড়ি তাকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে আসি। তখনও জানতাম না কে কেন আমার মেয়েকে খুন করার চেষ্টা করেছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, অভিজিৎ সাহার বিরুদ্ধে তার স্ত্রীকে খুনের চেষ্টা চালানোর অভিযোগ দায়ের করেছে সুস্মিতার বাড়ির লোকজন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্তকে। অনুমান, দাম্পত্য কলহের জেরে ঘটেছে এই ঘটনা। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
[ আরও পড়ুন: ‘দেশে এমন কোনও জেল নেই আজাদকে বন্দি করতে পারে’, পুলিশকে হুঁশিয়ারি ধৃতের ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.