পলাশ পাত্র, তেহট্ট: আনন্দ-উচ্ছ্বাসের মধ্যে দিয়ে অন্তিম লগ্নে জগদ্ধাত্রী পুজো। আলো ঝলমলে কৃষ্ণনগরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই চলছে প্রতিমা বরণ, সিঁদুরখেলার পালা। সঙ্গে ঘট বিসর্জন। প্যান্ডেলে ঘুরে প্রতিমা দর্শনের পর এই ঘট বিসর্জন যেন হুজুগেদের কাছে বাড়তি পাওনা। তাই তো বহু মানুষ অংশ নেন শোভাযাত্রায়।
কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা করেছিলেন মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র। কিন্তু এলাহি আয়োজনের মাধ্যমে ঘট বিসর্জনের রীতি যে ঠিক কীভাবে শুরু হল, তা নিয়ে রয়েছে মতভেদ। অনেকেই বলেন, আটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোয় শোভাযাত্রা-সহ ঘট বিসর্জনের শুরু। সেই সময় শোভাযাত্রায় দেখা যেত সং। কিন্তু কালের ধারায় সেই সংই বদলে হয়েছে ট্যাবলো। আবার কেউ কেউ বলেন, স্থানীয় গোলাপট্টি সর্বজনীনের পুজোতেই প্রথম ঘট বিসর্জনের সূত্রপাত হয়েছিল। কারও মতে, চাষাপাড়া বারোয়ারি পুজোকমিটিই ঘট বিসর্জনের পথ প্রদর্শক। সেই তালিকায় কারও কারও মতামতের ভিত্তিতে জায়গা করে নিয়েছেন চৌরাস্তা বারোয়ারির সদস্যরাও। রাজবাড়ি যাওয়ার পথে চৌরাস্তা বারোয়ারির পুজো মণ্ডপ। তাই একটু ভৌগোলিক সুবিধাও পেয়ে থাকে তারা। সঙ্গত কারণেই তাঁদের দাবিকে হেলাফেলা করার উপায় নেই। আড়ম্বরপূর্ণ ঘট বিসর্জন শুরু করেছিল কারা, সেই প্রতিযোগিতায় পা বাড়িয়ে দিয়েছে কলেজ স্ট্রিট বারোয়ারি পুজোকমিটিও। দাবি যাই উঠুক না কেন, ইতিমধ্যেই ঘট বিসর্জনকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে হাতারপাড়া বারোয়ারি। প্রত্যাশা যত বেড়েছে তত এই অনুষ্ঠানের শ্রীবৃদ্ধি ঘটেছে। একাধিক ট্যাবলো সহযোগে মঙ্গল ঘট বিসর্জনের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বেরোয়। তা দেখতে উপচে পড়া মানুষের ভিড়।
প্রতিবার ঘট বিসর্জনে নজর কাড়ে হাতারপাড়া সর্বজনীন। সাজানো গোছানো পালকিতে যায় মঙ্গলঘট। সঙ্গে থাকে একাধিক ট্যাবলো। একে একে ঘট বিসর্জনের পালা সাঙ্গ হলেই শুরু হয় ভাসানের পর্ব।
এদিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষ্ণনগর হাইস্ট্রিট থেকে জলঙ্গি নদী পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে প্রচুর মানুষ ভিড় করেন।আর এই ঘট বিসর্জনই চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর থেকে কৃষ্ণনগরকে আলাদা করে দিয়েছে। তাই একদিনের জগদ্ধাত্রী পুজো দেখতে কৃষ্ণনগরে যতটা না ভিড় হয় তার থেকে অনেক বেশি দর্শনার্থী ঘট বিসর্জনের শোভাযাত্রা দেখতে জমায়েত হন।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.