ছবি: প্রতীকী
শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: অর্থাভাবে শববাহী গাড়ি না পেয়ে কাঁধে করে মায়ের দেহ নিয়ে ছেলে ও বাবার হেঁটে যাওয়ার ঘটনায় নড়েচড়ে বসল স্বাস্থ্যদপ্তর। গঠন করা হল পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি। ওই কমিটির সদস্যদের আগামী ৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। যাতে কোনও শববাহী গাড়ি টাকা নিতে না পারে, সেদিকে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে।
বুধবার রাতে অসুস্থ স্ত্রী লক্ষ্মীরানি দেওয়ানকে (৭২) মেডিক্যাল কলেজের অধীনে থাকা জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভরতি করেন ক্রান্তির বাসিন্দা জয়কৃষ্ণ দেওয়ান। বৃহস্পতিবার ভোররাতে মৃত্যু হয় লক্ষ্মীরানির। মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য ছেলে রামপ্রসাদ দেওয়ানকে সঙ্গে নিয়ে শববাহী গাড়ির খোঁজ শুরু করেন জয়কৃষ্ণ। হাসপাতালের বাইরে গাড়ি পেয়েও যান তাঁরা। কিন্তু মৃতদেহ পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাঁদের কাছে ৩ হাজার টাকা ভাড়া চাওয়া হয় বলে অভিযোগ।
জয়কৃষ্ণবাবু জানান, তাঁদের কাছে মাত্র ১২০০ টাকাই ছিল। অসুস্থ স্ত্রীকে বাড়ি থেকে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল পর্যন্ত আনতে ভাড়া দিয়েছিলেন ৯০০ টাকা। এক্ষেত্রে ১২০০ টাকা পর্যন্ত দিতে রাজি হয়েছিলেন তাঁরা। হাতজোড় পর্যন্ত করেছিলেন, কিন্তু রাজি হননি কেউই। জানান, দিনমজুরি করে এর বেশি দেওয়ার সামর্থ্য কোথায়? বাধ্য হয়ে বাবা আর ছেলে মিলে মৃতদেহ কাঁধে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
এই দৃশ্য নিমেষে ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। যা দেখে এগিয়ে আসেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা। অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে মৃতদেহ নিখরচায় বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তারা। ঘটনার খবরে নড়েচড়ে বসে স্বাস্থ্য প্রশাসন। মেডিক্যাল কলেজের সুপার এবং ভাইস প্রিন্সিপাল কল্যাণ খাঁ ঘটনার কথা জেলা প্রশাসনকে জানান। এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে তার জন্য সমস্ত রকমের পদক্ষেপ করা হবে বলে জানান তিনি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.