শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: প্রায় চারশো বছর ধরে মানুষের সঙ্গে একাত্ম হয়ে শ্রীকৃষ্ণ বিরাজ করছেন রায়গঞ্জের (Raiganj) ঘোষাল পরিবারে। বছরের পর বছর জন্মাষ্টমীতে ওই বাড়িতে নামে মানুষের ঢল। আনন্দ-উদ্দীপনার মেতে ওঠেন স্থানীয়রা। করোনার কারণে জমায়েতে কিছুটা লাগাম টানা হলেও চলতি বছরেও নিষ্ঠা মেনে চলছে জন্মাষ্টমীর (Janmastami 2021) পুজো।
আজ অর্থাৎ সোমবার জন্মাষ্টমী। শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথিতে মেতে উঠেছে রায়গঞ্জ শহরের অলিগলি। শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি পালিত হচ্ছে রায়গঞ্জের বন্দর এলাকার ঘোষাল পরিবারে। নির্দিষ্ট টিনচালার গোবিন্দ মন্দিরের অন্দরে অধিষ্ঠিত হয়েছে শ্রীকৃষ্ণের বিগ্রহ। ব্রোঞ্জের এই বিগ্রহ কয়েকশো বছর ধরে পুজিত হয়ে আসছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
বাংলাদেশের দিনাজপুরের জমিদার পরিবারে শুরু হয় এই পুজো। ব্রিটিশ সাম্রাজ্য তখনও ভারতে ডালপালা মেলেনি, তার আগে থেকেই শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা শুরু ঘোষাল পরিবারে। স্বাধীনতার পর দিনাজপুর ছেড়ে রায়গঞ্জের বন্দরে চলে আসেন হরিপ্রসাদ ঘোষাল। সঙ্গে নিয়ে আসেন কৃষ্ণের বিগ্রহ। তারপর রায়গঞ্জের বন্দর এলাকায় কৃষ্ণের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ৭৪ বছর ধরে সেখানেই চলছে শ্রীকৃষ্ণের পুজো। হরিপ্রসাদ ঘোষাল আজ আর নেই। তবে শ্রীকৃষ্ণের মন্দিরে নিত্যপুজোর রেওয়াজ এখনও আছে।
ফি বছর জন্মাষ্টমীতে পুজো দেখতে স্থানীয়রা ভিড় জমান এই টিনচালা গোবিন্দ মন্দির প্রাঙ্গনে। বর্তমানে দেবাংশু ঘোষাল মন্দিরের দায়িত্বে। পাশাপাশি পুরোহিতের ভুমিকাতেও তিনি। দেবাংশুবাবু বলেন, “ঠাকুরদাদা এখানে মন্দির স্থাপন করেন। তারপর থেকে ধারাবাহিকভাবে এখানে শ্রীকৃষ্ণের পুজো আরতি চলছে।” অন্যান্যবারের মতোই এদিন সকালে মন্দিরের পুজো শুরু হয়। পুত্রবধূ দেবীরানী ঘোষাল বলেন, “আমি বিয়ে হয়ে আসার পর দেখেছি শ্বশুরমশাই দ্বিজেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষাল পুজো করতেন। তাঁর মৃত্যু পর থেকে আমার স্বামী পুজো করছেন একই মন্দিরে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.