সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: সাধ মেটাতে এবার গজরাজ ঘুরে গেলেন পুজো মণ্ডপ। দেবীমূর্তি এখনও মণ্ডপে না এলেও দেবীপক্ষের সূচনা হয়ে গিয়েছে। তাই বোধহয় একবার মণ্ডপ ঘুরে গেলেন গজরাজ। শনিবার মধ্য রাতে ঝাড়গ্রাম শহরবাসী দেখে শহর পরিক্রমা করছে দাঁতাল। ঘটনায় গোটা শহরে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা।
শহরের সুভাষ পার্ক এলাকায় মাঝ রাতে দোকানে করাঘাতের শব্দ শুনে দোকানী দরজা ফাঁক করে গজরাজকে দেখেন। সঙ্গে সঙ্গে দোকান বন্ধ করে দেন তিনি। শনিবার রাত সাড়ে এগারোটা থেকে প্রায় রাত আড়াইটে-তিনটা পর্যন্ত একটি দাঁতাল হাতি ঘুরে বেড়ালো সরকারি আধিকারিকদের আবসান, থানা, বনদপ্তরের ডিএফও অফিস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বাংলোর রাস্তা ধরে। শেষে ঝাড়গ্রাম স্টেশনে এসে একটি ফলের ঠেলা উলটে দেয়। স্টেশনের রাস্তায় শুয়ে থাকা এক ভবঘুরে মহিলার মাথায় শুঁড় বুলিয়ে দেয়। ভয়ে সেই মহিলা পালিয়ে গেলেও হাতিটি আক্রমণ করেনি।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার ঝাড়গ্রাম ব্লকের অন্তপাতি, খানাকুল এলাকা থেকে মানুষের তাড়া খেয়ে দাঁতালটি ঝাড়গ্রাম শহরে ঢুকে পড়ে। শহরের অরণ্য সুন্দরী মহাসংঘের চত্বরে প্রায় ঘণ্টা দেড়েক ছিল দাঁতালটি। বনদপ্তর সূত্রে খবর, মহাসংঘের গোডাউন থেকে চালের বস্তা টেনে বের করেছিল হাতিটি। এখানে থেকে হাতিটি তাড়া খেয়ে পৌঁছে যায় সুভাষ পার্ক হয়ে স্টেশনে। পরে হাতিটি আবারও ফিরে আসে ঘোড়াধরা ডিএফও বাংলো এলাকার রাস্তায়। সেখান থেকে ঘোড়াঘরা সর্বজনীন দূর্গোৎসব কমিটির পুজো মণ্ডপে ঢুকে পড়ে। যদিও মণ্ডপের কোন ক্ষয়ক্ষতি করেনি হাতিটি। সেখান থেকে হাতিটিকে রেল লাইন পার করিয়ে কদন কানন হয়ে জুলজিক্যাল পার্ক সংলগ্ন এলাকার খাস জঙ্গলের গভীর জঙ্গলে ঠেলে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে বনদপ্তর।
শহরবাসীর অভিযোগ দাঁতাল হাতিটি মধ্য রাত পর্যন্ত তাণ্ডব চালালেও বনদপ্তর অনেকটা পরে এসেছে। ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ এবং স্থানীয় যুবকেরা মূলত চেষ্টা চালিয়ে হাতিটিকে শহর ছাড়া করেছে বলে দাবি স্থানীয়দের। এই বিষয়ে ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হোলেইচ্ছি বলেন, “রাতে দীর্ঘ সময় ধরে হাতিটি শহরে ছিল। শেষ পর্যন্ত নিরাপদে গভীর জঙ্গলে ফেরানো গিয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.