চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: ধাপে ধাপে নয়, একদিনেই যাবতীয় পদে ইস্তফা, দলত্যাগ। বৃহস্পতিবার আসানসোল পুরনিগমের সদ্যপ্রাক্তন প্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারির (Jitendra Tiwari)এহেন কার্যকলাপের পর স্বভাবতই জল্পনা উসকে উঠেছিল, তিনিও বুঝি গেরুয়া শিবিরের পথে পা বাড়ালেন। আর তা ছড়িয়ে পড়তেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, যাঁর সঙ্গে জিতেন্দ্রর অহরহ রাজনৈতিক সংঘাতের সম্পর্ক, তিনি এ বিষয়ে আপত্তি তোলেন স্পষ্ট। বিজেপি মহিলা মোর্চা নেত্রী অগ্নিমিত্রা পলও বলেন, ”ওঁকে আসানসোলের মানুষ পছন্দ করে না। বিজেপিতে ওঁকে নেওয়া উচিত নয়।”
এরপরই সুর পালটে ফেলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। শুক্রবার সকালে আসানসোল থেকে কলকাতা যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে তিনি বললেন, ”কেন বিজেপিতে যাব? আমি কোর্টে প্র্যাকটিস করব।” এই উত্তর থেকেই স্পষ্ট, বিজেপিকে নিয়ে খানিকটা পিছু হঠছেন তৃণমূলের সদ্যপ্রাক্তন দাপুটে নেতা।
এদিকে, জিতেন্দ্র তিওয়ারি দলত্যাগ করায় উচ্ছ্বসিত পশ্চিম বর্ধমানের তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। তাঁর ছেড়ে আসা বিধানসভা কেন্দ্র পাণ্ডবেশ্বরে তাঁর ছবি দেওয়া ব্যানার ছেঁড়ার পর এবার রানিগেঞ্জের টিডিবি কলেজের ছাত্র সংসদের অফিসে জিতেন্দ্র তিওয়ারির ছবিতে কালি লেপে দিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। শুক্রবার সকালে দেখা যায়, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ অফিসের ভিতরে প্রাক্তন মেয়র তথা বিধায়কের ছবি রাখা ছিল। এই ছবিতেই কালি লেপে দেওয়া হয়েছে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় এই একই ছবি। বৃহস্পতিবার তিনি পুরপ্রশাসকের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ও দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতেই গতকাল পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক অফিস দখল করেছিল তৃণমূল। এবার পোস্টার ছেঁড়া, কালিলেপন।
এ নিয়ে জিতেন্দ্র তিওয়ারির বক্তব্য, ”আমি তৃণমূল ছেড়েছি। অন্য দলে এখনও যোগ দিইনি। এরকম প্রতিহিংসার তো কোনও মানে হয় না।” তিনি আরও জানান যে কলকাতায় যাচ্ছেন মেয়ের কাছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আর কথা বলবেন না। বৃহস্পতিবারর পর তাঁর নিরাপত্তারক্ষীও তুলে নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে জিতেন্দ্রর প্রতিক্রিয়া, দলের কাছে মনে হয়েছিল তাঁর জীবনের এতদিন মূল্য ছিল। এখন বোধহয় কোনও মূল্য নেই। তাই এমন সিদ্ধান্ত।
এদিকে, জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে নিয়ে ফের নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। তাঁর মতে, কোথাও কোথাও ভুল রটনা হচ্ছে যে তিনিই নাকি জিতেন্দ্রর মতো তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে তাঁদের বিজেপিতে টানছেন। কিন্তু তা সর্বেব মিথ্যে বলে দাবি আসানসোলের সাংসদের। বাবুলের স্পষ্ট বক্তব্য, ”দল যা খুশি সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু আমি নিজের সততা এবং শক্তি দিয়ে যাঁরা এতদিন আসানসোলে আমার সহকর্মীদের উপর অত্যচার চালিয়েছে, তেমন কোনও তৃণমূল নেতাকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া থেকে আটকানোর চেষ্টা করব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.