সুবীর দাস, কল্যাণী: জুনিয়র চিকিৎসক ও নার্সদের আন্দোলনের জেরে অচলাবস্থা জারি কল্যাণী কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড জেএনএম হাসপাতালে। বন্ধের মুখে চিকিৎসা পরিষেবা। বাধ্য হয়েই রবিবার সকাল থেকে হাসপাতাল ছাড়তে শুরু করেছেন রোগীরা। তবে পরিস্থিতি যাই হোক, নিজেদের দাবিতে অনড় আন্দোলনকারীরা।
গত বৃহস্পতিবার রাতে এক শিশুপুত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে। অভিযোগ ওঠে চিকিৎসকের গাফিলতিতেই দেড় মাস বয়সে মৃত্যু হয়েছে ওই শিশুর। ঘটনার পর এক জুনিয়র ডাক্তারকে মারধরের অভিযোগ ওঠে রোগীর পরিবারের বিরুদ্ধে। এরপরই বিক্ষোভ শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের বাইরে ধরনায় বসেন তাঁরা। শুক্রবারও দিনভর চলে অবস্থান। অভিযোগ, প্রথম থেকেই আন্দোলনের বিষয়ে উদাসীন ছিলেন অধ্যক্ষ কেশব মুখোপাধ্যায়।একদিন কেটে গেলেও আন্দোলনকারীদের দাবির বিষয়ে অধ্যক্ষ কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় তাঁকে অপসারণের দাবিতে সরব হন আন্দোলনকারীরা। শুক্রবার রাতেই পদত্যাগপত্র জমা দেন অধ্যক্ষ।
এরপর, নিজেদের দাবি নিয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা। কিন্তু তাতেও মেলেনি সমাধানসূত্র। ফলে রবিবারও আন্দোলনে শামিল ছিলেন চিকিৎসকেরা। এরই মধ্যে রবিবার পর্যাপ্ত নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলনে যোগ দেন নার্সরাও। ফলে রবিবার থেকে কার্যত বন্ধের মুখে হাসপাতালের পরিষেবা। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, যতক্ষণ উপাচার্য তাদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধান না করছেন, ততক্ষণ জারি থাকবে আন্দোলন।
আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের তরফে শুভঙ্কর ঘোষ জানান, জরুরি পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। ভরতির সময়ই রোগীদের জানানো হচ্ছে কেবলমাত্র সিনিয়র চিকিৎসকেরাই পরিষেবা দিচ্ছেন। এর পাশাপাশি, ইচ্ছে হলে রোগীকে অন্য হাসপাতালে ভরতি করানোর কথাও স্পষ্টভাবে তাঁদের পরিবারকে জানিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ফিরে যাচ্ছেন অনেকে। এমনকী চিকিৎসাধীন অনেকেই পরিষেবা না পেয়ে হাসপাতাল ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। চিকিৎসকদের অশান্তির মাঝে চূড়ান্ত ভোগান্তির শিকার রোগী ও তাঁদের পরিবার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.