পিন্টু প্রধান: পাটের স্তুপ, দড়ি, মেশিনের চাকা – সব আবার সচল। কর্মীরা টেনে টেনে কারখানার ভিতরে নিয়ে যাচ্ছেন পাটের বোঝা। মেশিনগুলো অনেকদিন বন্ধ থাকার পর ফের ঘরঘর শব্দে চলতে শুরু করেছে। কারখানা ভরতি কর্মী। পুরনো, চেনা ছন্দে ফিরেছে কাজের পরিবেশ। ২ মাসেরও বেশি সময় পর খুলে গেল রিষড়ার জুটমিলগুলো। রবিবার থেকেই পুরোদমে শুরু হয়ে গেল কাজ।
দেখে মনে হওয়ার জো নেই যে আজ রবিবার, ছুটির দিন। কর্মব্যস্ত দিনের মতোই স্বাভাবিক গতি রিষড়ার বিখ্যাত হেস্টিংস জুটমিলে। এখানে মোট সাড়ে চার হাজার কর্মী কাজ করেন। তিনটি শিফটে কাজ হয়। এতদিন তিন কেন, এক শিফটেও কাজ হয়নি। মাঝেমধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন কর্মী এসে কারখানার ভিতরটা দেখেশুনে গিয়েছেন। মাঝে চলে গিয়েছে দু মাসেরও বেশি সময়। করোনা সংক্রমণের জেরে লকডাউনের বন্দিদশায় চলে গিয়েছিল গোটা দেশ। স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল কলকারখানার কাজ। বাংলায় সদা কর্মমুখর শিল্পাঞ্চলগুলিতে নেমে এসেছিল নিস্তব্ধতা।
তবে এবার আবার সব স্বাভাবিকের পথে। সোমবার অর্থাৎ জুনের পয়লা তারিখ থেকেই ধাপে ধাপে উঠছে লকডাউন। ধীরে ধীরে চালু হয়ে যাবে অনেক কর্মক্ষেত্রই। ১০০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজে ছাড় পেয়েছে জুটমিলের মতো অনেক ক্ষেত্র। তবে সোমবার পর্যন্ত আর অপেক্ষা করতে পারলেন না রিষড়ার হেস্টিংস জুটমিলের শ্রমিকরা। রবিবারই তাঁরা কাজে যোগ দিতে চলে এলেন। কাজে ফেরার আনন্দের মাঝেও কিন্তু তাঁরা স্বাস্থ্যবিধির কথা ভুললেন না কেউ। বাইরে স্যানিটাইজেশনের পর হাতে গ্লাভস, মুখে মাস্ক পরে তবেই ঢুকলেন কারখানায়।
কারখানায় কর্তৃপক্ষের কথায়, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের নিষেধাজ্ঞা ও সমস্ত নিয়ম মেনেই খোলা হচ্ছে পাটকল। রবিবার তারই মহড়া চলছে। প্রত্যেক শ্রমিকের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হচ্ছে এবং এতজন একসঙ্গে কাজ করলেও যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে, সেদিকেও নজর রাখছেন তাঁরা। সবমিলিয়ে, লকডাউন কাটিয়ে এতগুলো দিন পর কাজে ফিরতে পেরে নতুন আশায় বুক বাঁধছেন শ্রমিক, কর্তৃপক্ষ উভয়েই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.