সৌরভ মাজি, বর্ধমান: বাজারে খুচরো সমস্যা আর খুচরো নেই। নানা জায়গায় এই নিয়ে অশান্তি। ছোট এক টাকার কয়েন কার্যত বাতিলের খাতায় চলে গিয়েছে। পঞ্চাশ, পঁচিশ পয়সা বা দশ পয়সার কয়েন তো কবেই অচল হয়ে গিয়েছে। সেই সব অচল কয়েনও এবার ‘সচল’ হচ্ছে। না খোলা বাজারে নয়, শিল্পকর্মের মাধ্যমে সেই সব অচল কয়েন শোভিত হবে।
[বাঁকুড়ার কালীতলার মাতৃ আরাধনায় ফিরে আসে অগ্নিযুগের ইতিহাস]
লক্ষাধিক কয়েন দিয়ে কালনার এক শিল্পী কালী প্রতিমা গড়ছেন। কালনার কাজ এবার শোভা পাবে নদিয়ার তাহেরপুরের সার্কুলার রক-এর মণ্ডপে। প্রতিমা গড়ার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে লক্ষাধিক কয়েন। এখনও পর্যন্ত প্রায় ষাট হাজার কয়েন জোগাড় হয়েছে। প্রায় ৯০ হাজার এক টাকার ছোট কয়েন প্রয়োজন হবে। বাকিগুলি পঞ্চাশ, পঁচিশ ও দশ পয়সার কয়েন। কেন এমন অভিনব উদ্যোগ? কালনার কাঁসারিপাড়ার শিল্পী অরিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, “মানুষের বয়স হয়ে গেলে আমরা তাঁদের বাতিল করি না। সম্মান জানিয়ে থাকি। কয়েনও আমাদের জীবনধারণে অপরিহার্য। এখন অচল হয়ে গিয়েছে বলে তা ফেলে দিতে হবে তার মানে নেই। সেই সব অচল কয়েনকেই শিল্পকর্মের মাধ্যমে সম্মান প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে প্রতিমা গড়ার মধ্য দিয়ে।” গত ছয় মাস ধরে কয়েন দিয়ে প্রতিমা গড়ার কাজ করছেন এই শিল্পী। অরিজিৎকে সহযোগিতা করছেন তাঁর স্ত্রী সুমনা ও তাঁর ভাই, নবম শ্রেণির ছাত্র অর্ঘজিৎ।
[পাহাড়ের চেয়ে ‘উঁচু’ প্রতিমা, ঝাড়গ্রামের আকর্ষণ ৬০ ফুটের কালী]
তাহেরপুর সার্কুলার রক ক্লাবের পার্থ নাথ, রাজু সরকার-সহ অন্যান্য কর্তারা কয়েনের সমস্যাটি নিয়ে ভেবেছিলেন। সমাজকে একটা বার্তা দিতেই এমন অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা। ক্লাব কর্তারা ঠিক করেন কয়েনের মাধ্যমেই এবারেরর পুজোয় বার্তা দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী ক্লাবকর্তারা যোগাযোগ করেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে। কয়েন যেহেতু রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সম্পত্তি তাই তাঁদের কাছে যান কর্তারা। অনুমতি নেন স্থানীয় থানা থেকেও। তারপর কয়েন দিয়ে প্রতিমা গড়ার কাজ করছেন তাঁরা। তবে কোনও কয়েনই সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কোনওভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে না। কয়েনকে কাটা বা ভাঙা হয়নি। বাজার অচল বললেও তা যে অচল নয়, সেই বার্তাই এবার দেবে শ্যামা মায়ের আরাধনায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.