সুমন করাতি, হুগলি: ত্রিবেণীর রঘু ডাকাতের কালীবাড়ি শুধু হুগলির নয়, রাজ্যেও বিশেষভাবে পরিচিত। প্রতিবছর রীতি মেনে হয় পুজো। এবছর তুঙ্গে পুজোর প্রস্তুতি। তবে এখন আর হয় না নরবলি।
ত্রিবেণী তখন গভীর জঙ্গলে ঢাকা। বাঘের উৎপাত। রঘু ঘোষ ও বিধুভূষণ ঘোষ, দুই ডাকাতের রাজত্ব। তারাই স্বপ্নে পাওয়া চেহারা অনুযায়ী তৈরি করেছিলেন মূর্তি। ডাকাতরা মাতৃরূপে জ্ঞান করতেন কালীকে। ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে মাকে স্নান করিয়ে পুজো দিতেন। সেই সময় চালু হয়েছিল নরবলি প্রথা। মধ্যেপ্রদেশ থেকে ফিরছিলেন সাধক রামপ্রসাদ। ত্রিবেণীতে আসতেই ধরা পড়েন রঘু ও বিধু ডাকাতের কাছে। রামপ্রসাদের কাছে কিছুই ছিল না। তখন মা কালীর সামনে তাঁকে বলি দেবে ঠিক করে ডাকাতরা। হারিকাঠে মাথা দেওয়ার আগে মা কালীর চরণে গান গাওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশ করেন। রামপ্রসাদ গান শুরু করলে রঘু ও বিধু ডাকাত বিহ্বল হয়ে পড়ে। কথিত আছে, সেই সময় নাকি রামপ্রসাদের মধ্যে কালীর মুখ দেখতে পায় ডাকাতরা। এই অলৌকিক ঘটনার পর কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে তারা। অনুশোচনায় রামপ্রসাদকে তো বটেই, বলি দেওয়াই বন্ধ করে দেয়।
মন্দিরের সেবাইত সুমন চক্রবর্তী বলেন, “৫০০ বছরের বেশি পুরনো এই পুজো। নরবলি বন্ধ হলেও শনি ও মঙ্গলবার এবং অমাবস্যায় ছাগ বলি হয়। মন্দিরে নিত্য পুজো হয়। কালীপুজোর দিন সকাল আটটা থেকে ভক্তদের পুজো দেওয়া শুরু হয়। দুপুরে খিচুড়ি, ভাজা, তরকারি দিয়ে ভোগ। দুপুরে মন্দির খুলে দেওয়া হয়। রাতের ভোগে বলির পাঁঠার মাংস, লুচি, খিচুড়ি, নাড়ু ও ল্যাঠা মাছ পোড়া।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.