রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: উঁচু ক্লাসের দাদাদের হাতে ‘ব়্যাগিং’-এর স্বীকার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র৷ সিনিয়রদের কথামতো ধূমপান না করায় মানসিক নির্যাতন করা হত বলে অভিযোগ ছাত্রের৷ ভয়ে স্কুলে যাওয়া আপাতত বন্ধ ওই পড়ুয়ার৷ এ কোনও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ঘটনা নয়, একেবারে কালনার শহরের একটি নামী সরকারি বিদ্যালয়েই এই ঘটনার অভিযোগ উঠে৷ যা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কালনা শহরে৷ ঘটনায় স্কুলের প্রধান শিক্ষককে জানানোর পাশাপাশি কালনা পুরসভার চেয়ারম্যানের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই ছাত্রের মা৷ তারপরেই ওই ছাত্রের নিরাপত্তা দিতে উদ্যোগী হয়েছে পুরসভার চেয়ারম্যান৷
কালনা পুরসভার চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, ‘‘কালনার মতো শহরে সরকারি স্কুলের মধ্যেই ব়্যাগিংয়ের ঘটনা খুবই চিন্তার বিষয়৷ স্কুলের মধ্যেই এই এই ধরনের ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না৷ অভিযুক্ত ছাত্রদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষকে৷ পাশাপাশি ওই ছাত্রদের কাউন্সেলিং করানোর জন্যও আবেদন করা হয়েছে স্কুলকে৷’’ এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে স্কুলের অন্যান্য অভিভাবকরাও৷ চেয়ারম্যান আরও জানান, এদিন তাঁর দপ্তরে ওই ছাত্রের মা কান্নাকাটিও করেন৷
[স্কুলেই ছাত্রীর ‘যৌন নির্যাতন’, অভিযুক্ত শিক্ষককে বেধড়ক মার অভিভাবকদের]
তিনি জানান, গত কয়েকমাস ধরেই ওই স্কুলের নবম শ্রেণির কয়েকজন ছাত্র তাঁর ছেলের উপর মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছিল৷ এই কারণে টানা কয়েক মাস ধরেই স্কুলে যেতে চাইছিল না তাঁদের সন্তান৷ কিছু বলতে চাইছিল না সে৷ পড়াশুনাও করতে চাইছিল না৷ দু’দিন আগেই এই নিয়ে ছাত্রকে জিঞ্জাসাবাদ করা হয়৷ সে জানায়, স্কুলেরই কয়েকজন ছাত্র তাকে ধূমপান করতে বাধ্য করছিল। স্কুলের মধ্যেই এই ঘটনা ঘটছিল দিনের পর দিন৷ অভিযোগ, ধূমপান না করতে চাইলে তাকে মারধরও হয়৷ এমনকি স্কুলের ছাদ নিয়ে গিয়ে তাকে হুমকি দেওয়া হয়৷ নানাভাবে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচারও করা হচ্ছিল৷ একজন ছাত্রই অন্য বন্ধুদের ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁর সঙ্গে এই আচরণ করছিল বলে অভিযোগ৷ ওই ছাত্রের বাবা জানিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত কয়েক মাস আগেই৷ অভিযুক্ত নবম শ্রেণির ছাত্র ও তাঁর সন্তান কালনা শহরের একটি টিউশন ব্যাচে পড়ত৷ সেখানেও তার উপর অত্যাচার করা হত বলেও অভিযোগ৷ এমনকি স্কুলে না গিয়ে বাইরে ঘুরতে যাওয়ারও জন্যও তাকে চাপ দেওয়া হত বলেও অভিযোগ। ঘটনার কথা শুনতে পেয়ে হতবাক ওই ছাত্রের পরিবার ও পুরসভার কর্তারা৷
[রেলের গাফিলতিতেই প্রাণহানি! ওভারব্রিজ কাণ্ডে ক্ষোভে ফুঁসছে বারুইপুর]
জানা গিয়েছে, ঘটনার কথা কালনা থানার এক পুলিশ আধিকারিকের কাছেও জানিয়েছে ওই ছাত্রের পরিবার। পুলিশের তরফেও ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে ঘটনার বিবরণ জানতে চাওয়া হয়েছে৷ যদিও এই অভিযোগ মানতে চাননি স্কুলের প্রধান শিক্ষক৷ স্কুলের সুনাম নষ্ট হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্রীমন্ত ঘোষ বলেন, ‘‘বিষয়টি ওই ছাত্রের পরিবার আমার কাছে মৌখিকভাবে জানিয়েছে। কোনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের স্কুল কোনওভাবে জড়িত নয়। টিউশন ব্যাচের ঝামেলা। তবুও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.