অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারির দাবিতে কালনায় বিক্ষোভ, ছবি : মোহন সাহা।
রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: ফাঁকা বাড়িতে ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় উত্তাল কালনা। ঘটনার পর চারদিন কেটে গেলেও অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার হয়নি। এই ঘটনায় পুলিশ নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে শনিবার ভোর ৬.৩০ মিনিট থেকে দুপুর দুটো পর্যন্ত দফায় দফায় বিক্ষোভ অবরোধে শামিল হল উত্তেজিত জনতা। মৃতার পরিবারের পাশাপাশি তার স্কুলের সহপাঠীরাও অবরোধে নামে। প্রায় সাড়ে আটঘণ্টা পর মন্তেশ্বর থানার পুলিশ বিক্ষুব্ধ জনতাকে বুঝিয়ে অবরোধ তোলে। পরিস্থিতি নিয়্ন্ত্রণে আনতে মৃতের পালিতা মা-কে আটক করেছে পুলিশ। শুরু হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদ। গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কালনার মন্তেশ্বরে।
জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্রীর বাড়ি মন্তেশ্বরের সাঁতরাপাড়ায়। দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করার কারণে মেয়েকে পড়াশোনা করানোর সক্ষমতা ছিল না। তাই মন্তেশ্বরের জামনা এলাকায় পালিতা মায়ের কাছে থাকত সে। সেই মহিলার নাম শ্যামলী চক্রবর্তী। তিনি আবার স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী। নাবালিকাকে নিজের বাড়িতে রেখে পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। বুধবার বর্ধমান জেলাপরিষদের বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া ছিল। তাই বাড়িতে ছিলেন না ওই মহিলা। অভিযোগ, ফাঁকা বাড়িতেই ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের পর খুন করে দুষ্কৃতীরা। তারপর বাড়ি লাগোয়া একটি নির্মীয়মাণ ঘরে দেহ ঝুলিয়ে দিয়ে চলে যায়। প্রতিবেশীদের রক্তাক্ত অবস্থায় ছাত্রীকে ঝুলতে দেখে মন্তেশ্বর থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। দুপুরে বাড়িতে ফিরলে মর্মান্তিক ঘটনাটি শ্যামলীদেবীর নজরে আসে।
এরপর চারদিন কেটে গেলেও এখনওপর্যন্ত কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুটছিলেন প্রতিবেশীরা। স্থানীয় জামনা হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর এই পরিণতিতে সহপাঠীরাও ক্ষুব্ধ ছিল। এদিকে নারকীয় ঘটনা ঘটিয়ে অভিযুক্তরা অধরা থাকলেও নিরুত্তাপ ছিলেন পালিতা মা। এই দেখেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এদিন সাতসকালেই মেমারি রোড অবরোধ করে বিক্ষোভে বসে যান প্রতিবেশীরা। একেএকে মৃতের আত্মীয় পরিজন ও সহপাঠীরাও বিক্ষোভে শামিল হয়। সকাল থেকে দফায় দফায় বিক্ষোভ চললে কালনায় উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে মন্তেশ্বর থানার পুলিশ বিশাল বাহিনী নিয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ক্ষোভের আগুন নেভাতে পালিতা মা শ্যামলী চক্রবর্তীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.