চন্দ্রজিৎ মজুমদার, কান্দি: চিকিৎসকের গাফিলতিতে শিশু মৃত্যুর অভিযোগকে কেন্দ্র করে রবিবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল কান্দি মহকুমা হাসপাতালে। ঘটনার জেরে হাসপাতালে চড়াও হন রোগীর বাড়ির লোকজন। চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় কান্দি থানার পুলিশ। দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এদিন বিকেলে বাড়ির পাশে খেলার সময় আচমকাই পাশের একটি পুকুরে পিছলে পড়ে যায় বছর দুয়েকের ঋদ্ধিমান হাজরা। বিষয়টি জানতে পেরেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন শিশু পরিবারের লোকেরা। তাকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি কান্দি মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁরা। কিন্তু হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। ওই শিশুকে মৃত বলে ঘোষণাও করেন। তবে মৃতের পরিবারের দাবি, হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পরও জীবিত ছিল শিশু।
পরিবারের এক সদস্য চিকিৎসকের গাফিলতির অভিযোগ তুলে বলেন, “বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পর দেখি ঋদ্ধিমান বেঁচে আছে। আবার তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। কিন্তু ফের চিকিৎসকরা ওই শিশুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।” এরপরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। মৃতের পরিবারের লোকজন চিকিৎসকদের হেনস্তা করতে শুরু করেন। এমনকী চড়াও হন স্বাস্থ্যকর্মীদের উপরও। হাসপাতালে উপস্থিত অন্যান্য রোগীর পরিবারের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় কান্দি থানার পুলিশ। তারাই পরিস্থিতি সামাল দেয়। মৃতের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু হলে মৃত্যুর ঘটনা এড়ানো যেত। কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃত ঋদ্ধিমানের মা রাধা হাজরা। বলেন, “হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরাই আমার ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী।”
ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। কান্দি থানার সুপার মহেন্দ্র নাথ মান্ডি বলেন, “জলে ডোবার পর দেহ উদ্ধার হলে সাধারণত তাপমাত্রা বেশি থাকে। সম্ভবত শিশুর বাড়ির লোক তার তাপমাত্রা থেকেই মনে করেছেন সে জীবিত। সেই ভুল বোঝাবুঝি থেকেই হয়তো এই ঘটনা ঘটে। তবে হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” শিশুর দেহ এই হাসপাতালেই ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি মৃতের পরিবার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.